নদিয়া: নদিয়া (Nadia) সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তিনদিনের নদিয়া সফরে মঙ্গলবার দুপুরেই পৌঁছন তিনি। সূত্রের খবর, মঙ্গল ও বুধবার কৃষ্ণনগরে থাকবেন মমতা। বৃহস্পতিবার যাওয়ার কথা রানাঘাটের হবিবপুরে ছাতিমতলার মাঠে। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা। বুধবার কৃষ্ণনগর কলেজ মাঠে কর্মিসভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। মঙ্গলবার হেলিকপ্টারে কৃষ্ণনগরে নামবেন তিনি। সেখান থেকে সার্কিট হাউজে যাবেন। রাতে সেখানেই থাকার কথা তাঁর। এমনও সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, নদিয়ায় রাস উৎসবে যেতে পারেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই নদিয়া সফরের পিছনে রাজনৈতিক সমীকরণ খুঁজছেন বিরোধীরা। বাম ও বিজেপির দাবি, ভোটের আগে শাসকদলের নড়বড়ে মাটি শক্ত করতেই নদিয়া সফরে মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা ভোট ও বিধানসভা ভোটে এ জেলায় গেরুয়া শিবিরের দাপট লক্ষ্য করা গিয়েছে। ভোট ব্যাঙ্ক নিজেদের দিকে জোরদার করেছে তারা। এই মুহূর্তে কল্যাণী, রানাঘাট দক্ষিণ, হরিণঘাটা, রানাঘাট উত্তর পশ্চিমে বিজেপিরই বিধায়ক রয়েছেন। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কও জিতেছিলেন বিজেপির টিকিটে। যদিও এ কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায় পরে তৃণমূলে যোগ দেন। অন্যদিকে এ জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে একটি বিজেপির। রানাঘাটের সাংসদ বিজেপির জগন্নাথ সরকার।
নিঃসন্দেহে এই জেলা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে। এ জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট। গত দুই ভোটে সিএএকে সামনে রেখে বিজেপি ভালই ভোট পায় এখানে। তাছাড়া নদিয়া জেলার একটা বড় অংশ বনগাঁ লোকসভার মধ্যে পড়ে। সেখানে রয়েছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের ঠাকুর পরিবারের অন্যতম মুখ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। পঞ্চায়েত ভোটে এখানে শক্তি বাড়াতে মরিয়া বিজেপি। তৃণমূলও কামড় দিতে চাইছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করেই নদিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি পরিষেবা খতিয়ে দেখে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে আরও তৎপরতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই সফর নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার চালাবেন না দল চালাবেন? দল বাঁচানোর জন্য দিনরাত ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারণ, দলে তো আর কোনও নেতার ভাবমূর্তি বলে কিছু নেই। কোনও নেতার বিশ্বাসযোগ্যতাই নেই। ওনাকে লড়তে হচ্ছে দিনরাত।”
পাল্টা কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, “তাহলে তো দিলীপদার বোঝা উচিত গোটা বিজেপিটা উঠে গিয়েছে। তাদের কোনও নেতা নেই, বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, সে কারণেই নরেন্দ্র মোদীকে দৌড়ে বেড়াতে হচ্ছে সারা দেশ। রাজ্য বিজেপি বলে কিছু নেই, তাই একুশ সাল থেকে দিল্লি ও সারা ভারতের বিজেপি নেতাদের ডেলি প্যাসেঞ্জারি করতে হচ্ছে বাংলায়।”