নদিয়া: নদিয়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তাঁতশিল্পীদের রমরমা। কিন্তু মহাজনের দাপট, পরিকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যায় তাঁতিদের দুর্দশার চিত্রটা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে বলে অভিযোগ। মাস গেলে তাঁদের রোজগার ক্রমেই তলানিতে ঠেকছে। ন্যূনতম চাহিদাটুকু মেটানোর মতোও আয় নেই বলে অভিযোগ তাঁতশিল্পীদের। শনিবার রানাঘাটের সভামঞ্চ থেকে তাঁতশিল্পীদের হয়ে পথে নামার ডাক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের বার্তা, শ্রমিক স্বার্থে মাঠে নামতে হবে। সেই তাঁতশিল্পী সিপিএমের হতে পারেন, বিজেপির হতে পারেন, কংগ্রেসের হতে পারেন, তৃণমূলেরও হতে পারেন। অভিষেক স্পষ্ট জানান, রাজনৈতিক রং দেখে নয়, তাঁতশিল্পীর স্বার্থই শেষ কথা বলবে।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি শুনেছি তাঁত শিল্পকে কেন্দ্র করে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ রয়েছেন। গতকালই একটা সম্মেলন শান্তিপুরে হয়েছে। সেখানে যে যা বলেছেন, আমি শুনেছি। আপনাদের দাবি ছিল, এই শিল্প মহাজনমুক্ত করা হোক। আমি আপনাদের কথা দিয়ে যাচ্ছি, তাঁতশিল্পের সঙ্গে যে তাঁত শিল্পীরা যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের দাবিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়ন আগামিদিনে রাস্তায় নামবে। কোঅপারেটিভ থেকে ঋণ নিয়ে প্রতিটা গোষ্ঠী যাতে স্বচ্ছন্দ্যভাবে কাজ করতে পারে, ব্যবস্থা যাতে মহাজনমুক্ত হয় তা সুনিশ্চিত করব।” এই কাজের জন্য আগামী ২-৩ সময়সীমাও বেঁধে দেন তিনি।
অভিষেকের বক্তব্য, “আমি শুনেছি তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্তদের দৈনিক রোজগার ১৫০-২০০ টাকা। মাস গেলে ৫ হাজার, সাড়ে ৫ হাজার টাকা। তেলের দাম ২০০ টাকা লিটার, চালের দাম ৬০ টাকা কেজি, রান্নার গ্যাস, পেট্রোলের দাম আকাশ ছোঁয়া। সেখানে তাঁতিদের যদি ৫-৬ হাজার টাকা হয়, তাঁরা সংসার চালাবেন কীভাবে? এই দাবিদাওয়া নিয়ে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। আমি আমাদের ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি-সহ সংগঠনের যাঁরা দায়িত্বে, তাঁদের বলব আগামী তিনমাস বৃহত্তর সংগঠন তৈরি করে রাস্তায় নামুন। শ্রমিকের ন্যূনতম আয় মাস গেলে ১২ হাজার টাকা আমাদের করতে হবে। দেখার দরকার নেই, বিজেপির শ্রমিক না সিপিএমের শ্রমিক না কংগ্রেসের শ্রমিক না তৃণমূলের শ্রমিক। যে বিজেপিকে ভোট দিয়ে বিজেপি করে সেও রান্নার গ্যাস ১ হাজার ১০০ টাকায় কেনে, সেও রান্নার তেল ২০০ টাকা লিটারে কেনে। জয় শ্রীরাম বলে তখন ভোট দিয়েছিল। এখন পেট্রোল পাম্পে জয় শ্রীরাম বললে ১০০ টাকার পেট্রোল ৫০ টাকায় পাবে না। যারা জয় শ্রীরাম বলে তাদেরও পেট্রোল ১০০ টাকায় কিনতে হয়, জয় বাংলা বললেও ১০০ টাকায় পেট্রোল কিনতে হয়।”