মালদহ : বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের (Biswa Bangla business summit 2022) হাত ধরেই বাংলার শিল্প ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়(Chief Minister Mamata Banerjee)। ইতিমধ্যেই রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য দেশ-বিদেশের শিল্পপতিদের দরাজ কণ্ঠে আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে বরাবরই উজ্জ্বল অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছে মালদহকে (Malda)। বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন উপলক্ষে একাধিক লগ্নি তালিকা পাঠানো হয়েছে জেলা থেকে। সবই অবশ্য অনুমোদিত প্রকল্প। উত্তরবঙ্গের এই জেলায় শিল্প বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। তৈরি হচ্ছে তিনটি শিল্প তালুক। ছোট-বড় মিলিয়ে ৮০ জন উদ্যোগপতি এই জেলায় বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শিল্পক্ষেত্রে যা ভাবনা তাতে ৮ থেকে ১০ হাজার কর্মসংস্থান হতে পারে বলে জেলা প্রশাসনের দাবি। এমনকী সবকিছু সঠিক রাস্তায় চললে দ্রুত বাংলার শিল্প মানচিত্রে এই জেলা বড় জায়গা করে নেবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। জেলায় যতগুলি বড় শিল্প তৈরি হচ্ছে তারমধ্যে সবথেকে বেশি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ইথাইল কারখানা নিয়ে। এছাড়াও শিল্পের দরজা খুলছে আরও একাধিক ক্ষেত্রে।
মালদহের নারায়নপুর, পান্ডুয়া ও গাজোলে তৈরি হবে তিনটি শিল্প তালুক। নতুন বিনিয়োগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মালদহের চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘জেলায় যে কটি শিল্প তালুক হবে সেগুলির হাত ধরে সাড়ে এগারো থেকে বারোশো কোটি টাকার বিনিয়োগ আসতে চলেছে। একটা ইথাইল কোম্পানি হওয়ার কথা রয়েছে। ৪টি নতুন হিমঘর তৈরির কথাও রয়েছে। তারমধ্যে দুটি সমস্ত রকম কাঁচা আনাচ রাখার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। বাকি দুটি শুধুমাত্র আলু রাখার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। একসঙ্গে মালদহের বিখ্যাত আমকে নিয়েও নতুন করে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে। আম বিক্রির বড় মাত্রায় বাণিজ্যকরণের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভাবে ম্যাঙ্গো জুস তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে’। এত সম্ভাবনার মধ্যেও এখনও উদ্বেগে রয়েছেন উদ্যোগপতিরা। কারণ অবশ্যই জমিজট।
এদিকে জমি সমস্যা যে নতুন শিল্পের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা তা মানছে জয়ন্তবাবুও। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিল্প ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যার মধ্যে সবথেকে বড় সমস্যা অবশ্যই জমির সমস্যা। আরও ভালো জমি যদি আমরা জেলায় পাই তবে বাইরে থেকে বড়বড় শিল্পপতিরা এখানে ব্যবসা করতে আসবেন। এই ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার আরও ভালো করে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি দেখলে সমস্যা মিটবে বলে মনে হয়। একইসঙ্গে রাজ্য সরকারের দেওয়া ভর্তুকির পরিমাণ আটকে থাকায় বাড়ছে সমস্যা। এই ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা আটকে রয়েছে। এটা পাওয়া গেলে ব্যবসায়ীদের অনেকটাই সুবিধা হবে’। তবে জমিজট যে জেলার বড় সমস্যা হয়ে রয়েছে তা মানছেন জমিদাতারও। অনেকেই জমির সঠিক দাম না পাওয়ায় জমি দিতে পিছুপা হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে জেলা তথা রাজ্যে কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় ভিন রাজ্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন জেলার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে আগামীতে মালদহের শিল্প ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এখন সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন- যুদ্ধের জের, রাশিয়ার সঙ্গে পাকাপাকি ভাবে ব্যবসা বন্ধের পথে টাটা স্টিল