হাওড়া: খেলাধুলায় মন দিতে চেয়ে আপাতত সমস্ত রাজনৈতিক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা (Laxmi Ratan Shukla)। মন্ত্রিসভার পাশাপাশি তিনি হাওড়া জেলা সদরের তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সভাপতির পদও ছেড়েছেন। তবে বিধায়ক পদে এখনও থাকছেন। মেয়াদ পুরো করেই রাজনীতির পাট চোকাবেন তিনি।
তাঁর এই সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাওড়া সদরের পরবর্তী তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নিয়োগ করা হল ভাস্কর ভট্টাচার্যকে। লক্ষ্মীরতন শুক্লার জায়গায় তাঁকে নিয়ে আসা হল। তিনি হাওড়া জেলার সম্পাদক তৃণমূল সম্পাদক ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস বাকি। হাওড়া জেলায় তৃণমূল গোষ্ঠীকোন্দল যখন মাথাচারা দিতে শুরু করেছে, তখন নবনিযুক্ত সভাপতি কী ভূমিকা নেন সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। অন্যদিকে লক্ষীর ছেড়ে যাওয়া ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রক আপাতত ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সামলাবেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এদিন দুপুরে আচমকাই ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং হাওড়া জেলা সদরের তৃণমূল সভপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন বাংলা রঞ্জি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লা। নবান্নে এই নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “লক্ষ্মী ভাল ছেলে। সবরকম পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক এই বিষয়ে আমার কাছে চিঠি এসেছে। রাজ্যপালকে ইস্তফা গ্রহণ করতে বলেছি। খেলার জন্যই রাজনীতি ও ছাড়তে চায়। ও খেলাতে বেশি মনোযোগ দিতে দিতে চায় বলে চিঠিতে জানিয়েছে।”
সূত্রের খবর, হাওড়া জেলার দুই তৃণমূল নেতা অরূপ রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতবিরোধের জেরে দলের অন্দরে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল লক্ষ্মীর। সম্ভবত সেই কারণেই তিনি হাওড়া জেলা সভাপতির পদ থেকেও ইস্তফা দিলেন। আপাতত ‘রাজনীতি থেকে অবসর’ নিলেও বিধায়ক পদে থাকবেন তিনি।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ইস্তফা নিয়ে মমতা বললেন, ‘ও ভাল ছেলে, খেলাতে বেশি মন দিতে চায়’
এই প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা তৃণমূল নেতা অরূপ রায় বলেন, “তিনি কী করবেন তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার সঙ্গে ছোট ভাইয়ের মত সম্পর্ক ছিল। মন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই চিনতাম। খুব ভাল সম্পর্ক। এই মুহূর্তে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি এমনটা করেন, তাহলে তো যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নের মতো।”
অন্যদিকে বালির তৃণমূল বিধায়ককে বৈশালী ডালমিয়াকে বলতে শোনা যায়, “দলে অনেক নেতা আছে যারা দলটাকে উইপোকার মত খাবলে খাচ্ছে। আমি, লক্ষ্মীরতন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি না। প্রতি পদে বাধা পাচ্ছি। দলের কিছু নেতা দলের ভিতরে থেকে ষড়যন্ত্র করে দলের অন্য নেতাদের দল ছাড়তে বাধ্য করছে। আমরা অপমানিত হতে দলে আসিনি। দলে সম্মান পাওয়া যাচ্ছে না। এইভাবে যদি এক একজন সরে যায় দলের পতন অনিবার্য। আমার বিশ্বাস যারা দলের ভিতরে থেকে চক্রান্ত করছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”
আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মী-ছাড়া’ রাজ্য মন্ত্রিসভা, মন্ত্রিত্ব-সভাপতি পদ ছাড়ার কারণও জানালেন শুক্লা