বারাকপুর: এবার তৃণমূল থেকে পদত্যাগ করলেন বারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত (Shilbhadra Dutta)। শুক্রবারই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন তিনি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “আমি এই মুহূর্তে দলের সমস্ত পদ ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। এতদিন দল আমাকে যে সুযোগ ও সুবিধা দিয়েছে, তার জন্য আমি ধন্য। দলের সঙ্গে কাটানো আমার মূল্যবান সময়ের গুরুত্ব আমি সারাজীবন দেব।”
উল্লেখ্য, দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারীর লেখা ইস্তফাপত্রের শেষ অনুচ্ছেদেও এই কথাগুলিই লেখা ছিল। শীলভদ্রের মনে যে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে শুরু করেছিল, তার আঁচ অনেক আগেই পেয়েছিল রাজনৈতিক মহল। অনেক আগেই বারাকপুরের বিধায়ক জানিয়েছিলেন, দলের টিকিটে আর নির্বাচন লড়তে চান না। মুকুল রায়ের সঙ্গে বরাবরই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তাঁর। তিনিও বিজেপিতে যাবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
জল্পনা বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার শুভেন্দু, জিতেন্দ্রর ইস্তফা নিয়ে যখন বঙ্গ রাজনীতিতে টানটান উত্তেজনা, তখনই তার আড়ালে শীলভদ্রের একটি পদক্ষেপও হালকা ইঙ্গিতপূর্ণ ছিল। আচমকাই গতকাল থেকে দলের নেতাদের কাছ থেকে চিকিত্সার জন্য ধার করা টাকা ফেরত দিতে শুরু করেন তিনি। সূত্রের খবর, বারাকপুরের পুর প্রশাসক উত্তম দাসকে ২ লক্ষ টাকা ফেরত দেন। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককেও টাকা ফেরত দিতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও টাকা ফেরত নিতে অস্বীকার করেন পার্থ।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে জটিল সমস্যার কারণে তাঁর লিভারে প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। সেই সময় চিকিত্সার জন্য ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন শীলভদ্র। বৃহস্পতিবার আচমকাই টাকা ফেরত দিতে শুরু করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, আগামী নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে আর লড়বেন না। দল ছাড়ার কিছুটা স্পষ্ট ইঙ্গিতই ছিল সেটা। তবে তারও আগে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন শীলভদ্র। লিখেছিলেন, ‘দমবন্ধ হয়ে আসছে।’ তখন আরও একবার তাঁর দলছাড়ার বিষয়টি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: ব্ল্যাক থার্স ডে! বিজেপির ‘চক্রব্যূহে’ আটকা পড়ল কি তৃণমূল?
সূত্রের খবর, তৃণমূল মহলেই গুঞ্জন রটতে থাকে, যে দলের টাকায় তিনি চিকিত্সা করালেন, সেই দলই তিনি ছেড়ে দেবেন! তবে এর জবাবও দিয়েছেন শীলভদ্র। লিখেছেন, “আমাকে দলগতভাবে কেউ সাহায্য করেছেন বলে মনে হয় না। অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিকগতভাবে যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন, তাঁদের টাকা ফেরত দিচ্ছি আমি।”