দমদম : প্রাণবন্ত দুটো ছেলে। তাদের পড়ার বই, স্কুলের ব্যাগ, ইউনিফর্ম সবই ছড়ানো রয়েছে ঘরে। কিন্তু তাদের আর ঘরে ফেরা হল না। খেলার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল তারা। কিন্তু এমন পরিনতি হবে, তা কল্পনাও করেনি তাদের পরিবার। অনেক ক্ষণ না ফেরায় যখন খোঁজাখুঁজি শুরু হয়, ততক্ষণে সব শেষ। পুকুর থেকে পাওয়া যায় দুজনকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
দমদম পুরসভার অন্তর্গত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম পল্লী এলাকাযর ঘটনা। শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ ওই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পরিবারের। মৃত দুই নাবালকের নাম শুভজিৎ দেবনাথ এবং শুভম বিশ্বাস। তাদের একজনের বয়স ৯ ও অপরজনের ১০। হরিজন কল্যাণ জিএসএফপি উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত শুভম আর হরদয়াল বয়েজ হাই স্কুলের ছাত্র শুভজিৎ। পাশাপাশি বাড়িতেই থাকত তারা। ক্ষুদিরাম পল্লী এলাকায় মাঠে প্রায়ই বিকেলে খেলতেও যেত দুজনে। কিন্তু শুক্রবার কী এমন ঘটল, তা বুঝে উঠতে পারছে না তাদের পরিবার। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার চাঞ্চল্য তৈরি হয় নিমতা ক্ষুদিরাম পল্লী এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নিমতা থানার পুলিশ।
মাঠ সংলগ্ন একটি পুকুর থেকেই তাদের উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় ওই মাঠে অনেকে উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি পরিবারের। সবার চোখের সামনে কী ভাবে তারা ডুবে গেল, কারও চোখে পড়ল না? বুঝতে পারছেন না আত্মীয়রা। এক আত্মীয়া জানান, ছেলেরা ফিরছে না বলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পুকুরের জলে তাঁরাই লাঠি নিয়ে খোঁজেন। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে, গোটা পরিবারে।
শুভম বিশ্বাস তার মাকে হারিয়েছিল ছোটবেলাতেই। বাবা, ঠাকুর্দা এবং কাকার সঙ্গে ছোট থেকে বড় হয়েছে। পড়াশোনায় অত্যন্ত ভাল ছিল বলেই জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। তার ঠাকুর্দা অত্যন্ত ভেঙে পড়েছে এই খবরে। নাতির বই, ব্যাগ আগলে বসে আছেন তিনি। শুভজিৎ দেবনাথের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর মা, বাবা ও দিদি।