বনগাঁ: হঠাৎ হইহই শব্দ। থমকে গেল থানার সমস্ত কাজ। কাতারে কাতারে লোক জমতে শুরু করেছে তখন গোপালনগর থানার সামনে। স্লোগান তুলছেন ‘বিরসা মুন্ডা জয়’, ‘সিধু কানু জয়’, ‘বিআর আম্বেডকর জয়’। পুলিশ থানার বেরিয়ে আসতেই জোরাল হল আওয়াজ। তির-ধনুক, ত্রিশূল উঁচিয়ে বিক্ষোভ আদিবাসীদের। অতর্কিত এই আন্দোলনে অপ্রস্তুত পুলিশ। কিন্তু কেন এই বিক্ষোভ?
উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার সামনে সোমবার দুপুরে কয়েকশো আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ তির-ধনুক, ত্রিশূল নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, আদিবাসী নেতা সুকুমার সরদারের গাড়ির ড্রাইভারকে গত শনিবার আটক করে গোপালনগর থানার পুলিশ। আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতাকে আটক করে হেনস্থা করা হয়। আর পুরো ঘটনার কোনও কারণ নেই বলে দাবি তাঁদের। পুলিশি জুলুমের অভিযোগ তুলে সোমবার দুপুরে কয়েকশো আদিবাসী পুরুষ মহিলা তাঁদের নেতা সুকুমার সরদারকে নিয়ে থানার সামনে জড়ো হন।
কেন সুকুমারবাবুকে হেনস্থা করা হয়েছে, তার জবাব চাইতে থাকেন তাঁরা। প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলতে থাকে। এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, একটি ছিনতাই মামলার তদন্তের কারণে সুকুমার সর্দারের গাড়ির ড্রাইভারকে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁকে কোনওরকম হেনস্থা বা শারীরিক আঘাত করা হয়নি। কিন্তু সুকুমারবাবুর দাবি ভিন্ন।
এদিকে ‘বিরসা মুন্ডা জয়’, ‘সিধু কানু জয়’, ‘বিআর আম্বেডকর জয়’ স্লোগান ওঠে থানার সামনে। উপস্থিত আদিবাসীদের হাতে ত্রিশূল ও তির-ধনুক। আদিবাসী নেতার গাড়ি চালককে আটকের তীব্র প্রতিবাদ জানান তাঁরা। পরিস্থিতি ঘোরাল হতে শুরু করে। কয়েকশো পুরুষ-মহিলা সম স্বরে থানার বড়বাবুর উদ্দেশে ডাক দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খায় পুলিশ।
সুকুমারবাবুর দাবি, বেআইনি ভাবে আটকে রাখা হয় হয় গাড়ি চালককে। হেনস্তা করা হয় আদিবাসী নেতাকে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে তাঁরা ধরনা দেবেন।
এদিকে পুলিশ মাইকিং করে বিক্ষোভস্থলেই অভিযোগ শুনতে চান। এরপর আরও তীব্র হয় আন্দোলন। পুলিশের বিরুদ্ধে ফের স্লোগান ওঠে। এদিকে বাগদা পুলিশের তরফে আধিকারিকরা অভিযোগ শুনতে চান। করোনা পরিস্থিতিতে ভিড় করতে বারণ করেন তিনি। এর পর সুকুমার মাইকিং করে তাঁর এক এক করে অভিযোগ জানাতে থাকেন। অপর প্রান্ত থেকে পুলিশ-ও তার উত্তর দিতে থাকেন। বেশ কিছুক্ষণ এমন চলার পর অবশেষে বিক্ষোভ উঠে যায়।
গোপালনগর থানার ওসি এবং এসডিপিও বাগদা আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে সমস্যা সমাধান করবার জন্য থানাতে এসে আলোচনা করতে চান। জানান প্রতিনিধি দল নিয়ে আসার জন্য।
আরও পড়ুন: Fraud DSP Arrested: ডিএসপি সেজে তোলা নেওয়ার অভিযোগ, হাতেনাতে গ্রেফতার দুই