Sundarban: ‘বাঘটা মাথার ডান দিকে থাবা বসিয়েছিল, ছাড়াতে পারছিলাম না কিছুতেই!’ চোখে আতঙ্ক সুন্দরবনের মৎসজীবীর
South 24 Pargana: কোনও রকমে বাঘের মুখ থেকে প্রাণে বাঁচলেন ওই মৎস্যজীবী।
সুন্দরবন: সুন্দরবনের জনপ্রিয় কথা ‘জলে কুমির ডাঙায় বাঘ’। মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে সেখানে হামেসাই বাঘের মুখে পড়তে হয় মৎস্যজীবীদের। অকালেই প্রাণ যায় প্রচুর মানুষের। আবার বরাত জোরে ফিরে আসেন কেউ-কেউ। সেইরকমই ঘটনা ঘটল গতকাল।
জঙ্গলে গিয়েছিলেন কাঁকড়া ধরতে। আর তারপর কোনও রকমে বাঘের মুখ থেকে প্রাণে বাঁচলেন ওই মৎস্যজীবী। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে সঙ্গে থাকা অন্যান্য মৎস্যজীবীরা। শনিবার গভীর রাতে তাঁকে প্রথমে পাথরপ্রতিমা ব্লক হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তরিত করা হয় কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে।
ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের বিজুয়াড়া জঙ্গলে। সপ্তাহ খানেক আগে নৌকাতে করে ১০ জনের একটি মৎস্যজীবী দল সুন্দরবনের বিজুয়াড়ার জঙ্গলে নদীতে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিল। সন্ধে নাগাদ নদীর পাড় থেকে নৌকাতে ওঠার সময় পিছন থেকে পঞ্চান্নর বছরের পঞ্চাননের উপর হামলা করে বাঘ। মাথার ডান দিকে খাবা বসিয়ে পঞ্চাননকে গভীর জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সে। সেই সময় পঞ্চাননবাবুর চিৎকার শুনতে পান অন্যান্য মৎস্যজীবীরা। বিপদের আঁচ করতে পারেন তারা। সঙ্গে-সঙ্গে হাতের কাছে থাকা লাঠি নিয়ে পাল্টা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘের উপর। আর তখনই বাঘ শিকার ছেড়ে জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় পঞ্চাননকে উদ্ধার করে রাতেই নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে।
বাঘের থাবার আঘাতে মৎস্যজীবীর মাথার ডানদিকে ও হাতে ক্ষত রয়েছে। প্রাণে বেঁচে ফিরে আসায় মৎস্যজীবীর চোখেমুখে আতঙ্ক।
অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গেও কয়কদিন আগে এক চিতাবাঘ ঘুম কেড়েছিল এলাকাবাসীর। অনান্য দিনের মতো সকালে কাজে গিয়েছিলেন চা বাগানের ১২ নম্বর সেকশনের কর্মীরা। খাঁচার মধ্যে এই চিতাবাঘটি দেখতে পান শ্রমিকরা। এরপর মালবাজার বন দফতরকে খবর দেওয়া হলে বন কর্মীরা গিয়ে খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ টিকে গরুমারায় নিয়ে যান। বাঘের শারীরিক অবস্থা ভাল থাকলে, তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে বনদফতর সূত্রে খবর।
এক শ্রমিক বলেন, “অনেক দিন ধরেই একটা ভয় মনে কাজ করছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম চিতাবাঘ ঢুকছে গ্রামে। আমাদের অনেকের বাড়ি থেকেই পোষ্য উধাও হয়ে যাচ্ছিল। বাড়ির উঠোনে পায়ের ছাপও দেখতে পেয়েছিলাম আমরা। তখনই বনদফতরে খবর দিই।”
অন্যদিকে, এক বনকর্মী বলেন, “গ্রামবাসীরা জানিয়েছিলেন চিতাবাঘ ঢুকছে গ্রামে। আমরা বিষযটা খতিয়ে দেখি। জঙ্গলে থেকে গ্রামে ঢুকছিল পশুটি। পায়ের ছাপও দেখতে পেয়েছি আমরা। তারপরই খাঁচা পাতা হয়। এর আগে একাধিকবার খাঁচা পাতা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। তবে চিতাবাঘটি ধরা দিচ্ছিল না। অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিলাম। শনিবার রাতে আবারও খাবার দিয়ে খাঁচায় রাখা হয়। খাবারর লোভেই চিতাবাঘটি ধরা দেয়।”