Gosaba By-Election 2021: রাত পোহালেই ফল ঘোষণা, জারি থাকল ১৪৪ ধারাও, কড়া নজরদারি গোসাবায়

South 24 Pargana: তফশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত এই বিধানসভা কেন্দ্রে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জয়ন্ত নস্কর জয়ী হয়েছিলেন

Gosaba By-Election 2021: রাত পোহালেই ফল ঘোষণা, জারি থাকল ১৪৪ ধারাও, কড়া নজরদারি গোসাবায়
গোসাবা উপনির্বাচনের গণনা শুরু আগামিকাল, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 01, 2021 | 10:55 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রাত পোহালেই গোসাবা উপনির্বাচন কেন্দ্রে (Gosaba By-Election 2021) গণনা শুরু হবে। উপনির্বাচনের ফল  ঘোষণা হবে আগামিকাল মঙ্গলবারই। তার আগে কোনওরকম অপ্রীতিকর ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে তত্‍পর গোসাবা প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই  ক্যানিং বঙ্কিম সর্দার কলেজে শুরু হবে ভোট গণনার কাজ। তার আগে গোসাবাতে জারি থাকল ১৪৪ ধারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর,  বঙ্কিম সর্দার কলেজ চত্বরে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। ক্যানিং -বারুইপুর রোড সহ বিভিন্ন সড়ক পথ গুলিতে চলছে পুলিশি নাকা চেকিং। কলেজ চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে ৩০০ পুলিশ। কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে রাখা হয়েছে গোটা কেন্দ্র। বিভিন্ন পয়েন্টে চলছে নাকা চেকিংও। এছাড়া থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কোভিড বিধি মেনেই চলছে কাজকর্ম।

সুন্দরী গাছের সারি। গভীর অরণ্যের বাঁক না চিনলে হারিয়ে যেতে হয়। জলে নামলে কুমিরের ভয়, আর ডাঙায় রয়েছে বাঘ। নানাসময়েই পশ্চিমবঙ্গের এই বিধানসভা কেন্দ্রে বাঘ এসে মত্‍স্যজীবীদের টেনে নিয়ে গিয়েছে বা বন্যায় ভেসেছে ঘর এমন ছবি সামনে এসেছে। উপনির্বাচনের আগেও গোটা গোসাবা জুড়ে দেখা গিয়েছিল এই বিশেষ নজরদারির ছবি।

গোসাবায় ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে থেকেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে চলে, তা নিশ্চিত করতে ভোট ঘোষণার পর থেকে গোসাবার পরিচিত অন্তত ১৫০ জন অপরাধীকে নজরে রাখা হয়েছিল।  এই বিধানসভা কেন্দ্রের মোট বুথের সংখ্যা ৩৩০। তার মধ্যে ৭৯ শতাংশ বুথে ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চলেছে।

সূত্রের খবর, ১৮৯টি বুথে ওয়েব কাস্টিং, ৪৩টি বুথে ছিল মাইক্রো অবজার্ভার এবং সিসিটিভি। আরও ৩০টি বুথে ভিডিয়োগ্রাফির ব্যবস্থা করা হয়। তবে কিছু এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা না থাকায় সেখানে ওয়েব কাস্টিং করা যায়নি। সেখানে সিসিটিভি এবং মাইক্রো অবজার্ভার বসানো হয়। তবে স্পর্শকাতর ও উত্তেজনাপ্রবণ বুথের সংখ্যা কমে হয়েছে ১৬২। উত্তেজনাপ্রবণ বুথের মধ্যে চুনখালি ও রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যথাক্রমে ১২ এবং ৯টি বুথ ছিল। পাশাপাশি অতিরিক্ত উত্তেজনাপ্রবণ বুথের মধ্যে ছিল সাতজেলিয়া এবং মসজিদমাটি।  এই বিধানসভায় মোতায়েন থাকছে ২৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ৯৬৭ জন রাজ্য পুলিশ।

গোসাবায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী হয়েছিলেন জয়ন্ত নস্কর। জয়ীও হন নির্বাচনে। করোনা আক্রান্ত হয়ে এই প্রবীণ নেতার মৃত্য়ুর পরে এই কেন্দ্রে কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছিল ঘাসফুল শিবিরের। এরপর ভবানীপুরে উপনির্বাচনের ফলঘোষণার দিন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান গোসাবার প্রার্থী কাকে করা হবে তা পরেই জানানো হবে। তারপরের দিনই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোসাবার প্রার্থী হতে চলেছেন  সুব্রত মণ্ডল। অন্যদিকে, বিজেপির তরফে প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পলাশ রানার।

তফশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত এই বিধানসভা কেন্দ্রে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জয়ন্ত নস্কর জয়ী হয়েছিলেন৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৯০,৭১৬৷ দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন আরএসপি প্রার্থী উত্তমকুমার সাহা৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৭১,০৪৫৷  ১৯,৬৮১ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন জয়ন্ত।

আরএসপির শক্ত ঘাটি হিসেবে পরিচিত এই কেন্দ্রে ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আরএসপি প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল গোসাবা (তফসিলি জাতি) কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ন্ত নস্করকে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৭৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আরএসপির গণেশ মণ্ডল এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন।

২০০১ ও ১৯৯৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের সুজিত প্রমাণিককে পরাজিত করেছিলেন গণেশ। তাছাড়া ১৯৯১ সালে কংগ্রেসের জিতেন্দ্রনাথ গায়েন, ১৯৮৭ সালে কংগ্রেসের প্রমীলা বিশ্বাস, ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের সন্ধ্যাকর মণ্ডল ও ১৯৭৭ সালে কংগ্রেসের পরেশ বৈদ্যকেও পরাজিত করেছিলেন তিনি। ১৯৭২ সালে কংগ্রেসের পরেশচন্দ্র বৈদ্য এই আসনে জয়ী হ‌য়েছিলেন। ১৯৭১ এবং ১৯৯৬ সালেও গণেশ এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৬৭ সালে ভারতীয় জনসংঘের জি.এন. মণ্ডল গোসাবা আসনে জয়ী হয়েছিলেন।

এক নজরে গোসাবা বিধানসভা নির্বাচন ২০২১

জয়ন্ত নস্কর (তৃণমূল) -প্রাপ্ত ভোট ১,০৫৭২৩ ( ৫৪ শতাংশ) বরুণ প্রামাণিক (বিজেপি)- প্রাপ্ত ভোট   ৮২০১৪ (৪১.৮৯ শতাংশ) অনীল চন্দ্র মণ্ডল (আরএসপি)- প্রাপ্ত ভোট ৪৮৭১ (২.৪৯ শতাংশ)

গোসাবা বিধানসভা ২০১৬

জয়ন্ত নস্কর (তৃণমূল)- প্রাপ্ত ভোট ৯০৭১৬ (৫০.৫২ শতাংশ) উত্তম কুমার সাহা ( আরএসপি) -প্রাপ্ত ভোট  ৭১০৪৫ (৩৯.৫৭ শতাংশ) সঞ্জয় কুমার নায়েক (বিজেপি)- প্রাপ্ত ভোট ১১৫০৪ (৬.৪১ শতাংশ)

আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘যেদিন স্যান্ডো গেঞ্জির পকেট তৈরি হবে, সেদিন প্রধানমন্ত্রী হবেন দিদিমণি’