বাগুইআটি: ফ্ল্যাট কিনে একদিকে গুনতে হচ্ছে ব্যাঙ্কের ইএমআই (EMI) অন্যদিকে দিতে হচ্ছে ভাড়া। বিপাকে বাগুইআটির ফ্ল্যাট মালিকরা। থানায় অভিযোগ জানিয়েও হয়নি সুরাহা বলে ক্ষোভ। এমনকী এলাকার কাউন্সিলরের নাম জড়িয়েছে মালিকদের হুমকি দেওয়ার ঘটনায়।
বাগুইআটির দেশবন্ধু নগর এলাকায় আট ফুট রাস্তায় করোনাকালে গড়ে উঠেছিল একটি পাঁচতলা বিল্ডিং। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে সেই বিল্ডিং বেআইনি বলে ঘোষণা করে বিধাননগর কর্পোরেশন। এরপরেই মাথায় হাত পড়ে ফ্ল্যাট মালিকদের। চলতি বছরের শুরুতে এক প্রস্থ বিল্ডিং ভাঙার কাজ হয়। এরপরেই বিগত তিন মাস ধরে ওই বেআইনি বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাট মালিকেরা অন্য জায়গায় ভাড়া থাকতে হচ্ছে।
ফলে একদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার থেকে ঋণ নিয়ে সেই ঋণ যেমন পরিশোধ করতে হচ্ছে, তেমনই এখন গুনতে হচ্ছে তাঁদের ভাড়া। এমনকী, জমির মালিক অশোক কুমার কর তাঁদের প্রতারণা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। জমির মালিকদের দাবি, তাঁদের স্বাক্ষর নকল করে বিল্ডিংয়ের প্ল্যান বার করা হয়েছে। যেটা সম্পূর্ণ ভুয়ো। এমনকী, জমির মালিকদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা পূরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, ফ্ল্যাট মালিকদের আরও অভিযোগ, অন্য একটি বিল্ডিংয়ের প্ল্যান নম্বর দিয়ে তাদের ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করা হয়। বিধান নগর কর্পোরেশন বিল্ডিং অবৈধ ঘোষণা করার পরেই তারা এই সমস্ত বিষয় জানতে পারেন। এরপরে প্রোমোটারের কাছে তারা টাকা ফেরত চাইলে তাঁদেরকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী মারধর করা হয় এক ফ্ল্যাট মালিককে এমনটাই অভিযোগ। এরপরে গত জুন মাসে বাগুইআটি থানার দারস্থ হন। এফআইআর করা হয়। কিন্তু তারপরেও গ্রেফতার হয়নি প্রোমোটার। উল্টে তাদের রীতিমতো হুমকি দেওয়া হচ্ছে রাতের অন্ধকারে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন ফ্ল্যাট মালিকেরা। অভিযোগ প্রোমটার রাজু গাইন ও সৈকত দাসের বিরুদ্ধে। তাঁদের আরও অভিযোগ, এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
আর এক মালিক বলেন,”আমার সঙ্গে ওসির আলোচনা হয়েছে। প্রোমোটারদের কোনও ভাবেই ছাড়া হবে না। ওদের গ্রেফতার হবে।”রাহুল রায় বলেন, “৩৮ লক্ষ টাকা ফ্ল্যাটের দাম। যখন ভাঙার অর্ডার আসে তখন ফ্ল্যাট ফুটো করে দেওয়া হয়। খুব অসুবিধায় পড়ি। এখন আমাদের লোনও গুনতে হচ্ছে। ভাড়াও গুনতে হচ্ছে।”
এমনকি বিধাননগর পুরসভা ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ নাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন জমির মালিকরা। প্রসেনজিৎ নাগ বলেন, “আমি এই ঘটনায় জড়িত নই। কাউকে কোনওদিনও একটা ফোন করিনি। আমি যা করি কোর্টে লড়ি। ব্যক্তিগতভাবে কাউকে ফোন বা কারোও তাঁবেদারি করি না।”