উত্তর ২৪ পরগনা: করোনা (Corona) আবহে ফের এক অমানবিক চিত্র। এবার উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার বেলে মাঠ এলাকা। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত বৃদ্ধা পড়ে রইলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্রশাসন থেকে কারও সাড়া না পেয়ে পিপিই কিট পরে নিজেই মায়ের দেহ নিয়ে শ্মশানে গেলেন মেয়ে।
তীব্র ঝড়-বাদলার দিন। করোনায় মৃত্যু অশীতিপর বৃদ্ধার মৃতদেহ সৎকারে কারও সাড়া পেলেন না মেয়ে। এগিয়ে এল না প্রশাসন থেকে প্রতিবেশীদের কেউই। রবিবার সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা, ১২ ঘণ্টা বাড়িতে মায়ের দেহ আগলে বসে রইলেন আশালতা মণ্ডল। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা কর্মসূত্রে থাকেন ভিন রাজ্যে। কাউকে না পেয়ে পিপিই কিট পেয়ে মায়ের দেহ নিয়ে নিজেই শ্মশানে গেলেন মেয়ে।
মৃতার মেয়ে আশালতা জানান, গত সাত দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন মা। গত ৬ মে তাঁর করোনা পরীক্ষা করানো হয়। ৮ তারিখে করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট পজেটিভ আসে। এরপর বাড়িতেই একান্তবাসে ছিলেন বৃদ্ধা। চিকিৎসাও চলছিল।
কিন্তু শনিবার রাত থেকে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়। রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। এদিকে মৃত্যুর ১২ ঘণ্টা পার হলেও না প্রশাসনের সাড়া মেলেনি। সংক্রমণের ভয়ে এগিয়ে আসেনি কোনও প্রতিবেশীও। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির উঠোনে পড়ে থাকে মৃতদেহ। বারবার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন মেয়ে। কিন্তু তাদের কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। দুটি পিপিই কিট দিয়ে একজন চলে যান। অবশেষে শবদেহ নিয়ে গাড়িতে ওঠেন বাড়ির দুই মহিলা। পিপিই কিট পরে মায়ের শেষকৃত্য করতে যান দুই মহিলা সদস্য। এদিকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে একপ্রস্ত সমস্যায় পড়েন তাঁরা। সব মিলিয়ে ৯ মে, রবিবার তারিখ যেন এক গভীর ক্ষত হয়ে রইল দুই মহিলার মনে।
আরও পড়ুন: করোনা মৃতের দেহ লোপাটে অভিযুক্ত হাসপাতাল, থানাতেও মেলেনি সাহায্য!
কাঁদতে কাঁদতে আশালতা জানালেন, মায়ের সঙ্গে যা হল, এমনটা যেন আরও কারও সঙ্গে না হয়। প্রশাসনের দিকেও আঙুল তুললেন মহিলা।