খড়দহ: ধীরস্থির স্বভাবের, অত্যন্ত বিনয়ী, দৃশ্যত ভদ্র চেহারার ছেলেটাকে বিশ্বাস করে ফেলতেন গাড়িমালিকরা। গাড়ির মালিকদের কাছ থেকে কাজের জন্য গাড়ি ভাড়া নিতেন। ভাড়াও দিয়ে দিতেন সময় মতো। কিন্তু অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরেই ভাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। সন্দেহ হয় গাড়িমালিকদের। গাড়ি ফেরত চাইতে গেলেই হয় পর্দাফাঁস। রহড়া রামকৃষ্ণপল্লি এলাকার গাড়িচালক শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের আসল পরিচয় জানা যায়। তদন্তে নেমে খড়দহ থানার পুলিশ পর্দাফাঁস করে এক বড় প্রতারণা চক্রের।
জানা যাচ্ছে, শুভজিৎ এলাকারই বিভিন্ন বাসিন্দার গাড়ি ভাড়ায় চালাতেন। কিন্তু ইদানীং তাঁদের প্রত্যেককেই ভাড়া দিতে অস্বীকার করছিলেন শুভজিৎ। গাড়ি ফেরত চেয়ে নেন মালিকরা। অভিযোগ, শুভজিৎ তখন তাঁদের গাড়ি দিতে অস্বীকার করেন। এরপর সন্দেহ হওয়াতে গাড়ির মালিকরা খড়দহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
খড়দহ থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, শুভজিৎ সেই সমস্ত গাড়ি অন্য জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছেন। এরপরই শুভজিতের ওপর গোপনে নজর রাখেন তদন্তকারীরা। খড়দহ থানার পুলিশ গোপন অভিযান চালিয়ে গাড়ি পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা শুভজিৎ, গোপাল বেরা ও আকাশ দাসকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খড়দহ কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে চারটি গাড়ি উদ্ধার করেছে খড়দহ থানার পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ধৃতরা প্রত্যেকেই রহড়া ও ঘোলার বাসিন্দা। ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়ে ব্যারাকপুর আদালতে পাঠিয়েছে খড়দহ থানার পুলিশ। এক গাড়ির মালিক বলেন, “আমরা তো ছেলেটাকে ভরসাই করেছিলাম। কথাবার্তা এত ভাল, কীভাবে বুঝব বলুন, কাউকে তো বিশ্বাসই করা যায় না। ভাগ্যিস গাড়ি পেয়ে গিয়েছি। এখন কী কী গেছে, কে জানে!”
পুলিশ মনে করছে, ধৃতরা বড় গাড়ি পাচারচক্রের সঙ্গে জড়িত। এই চক্রের বাকিদের খোঁজ ধৃতদের থেকে মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।