উত্তর ২৪ পরগনা: বসিরহাটে (Basirhat) অজানা জ্বরে (Unknown Fever) আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। উদ্বিগ্ন প্রশাসনও। বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ, সন্দেশখালি ১ ও ২নম্বর, হিঙ্গলগঞ্জ, বাদুড়িয়া ও হাড়োয়া সহ ১০টি ব্লকের প্রায় শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক মিলে ৫০ জনের অধিক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি। ইতিমধ্যে তাঁদের রক্ত পরীক্ষা পরীক্ষা হয়েছে। অন্যদিকে লালা রস নিয়ে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।
পাশাপাশি করোনার প্রাথমিক উপসর্গ জানতে র্যাপিড টেস্ট করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে সময় যত যাচ্ছে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ভয়ের কোন কারণ নেই এটা ঋতু পরিবর্তনের ফলে ভাইরাল ফিভার।
এর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের অজানা জ্বরের উপসর্গের মিল পাওয়া যাচ্ছে না। ভয়ের কোনও কারণ নেই। যদিও মহকুমায় যে হারে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
বৃহস্পতিবার বসিরহাট জেলা হাসপাতালে শিশু বিভাগে জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের পরিদর্শনে যান বসিরহাট দক্ষিণের চিকিৎসক বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় ও বসিরহাট পৌরসভার পৌর প্রশাসক অসিত মজুমদার। ইতিমধ্যে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, “বিনা কারণে শিশুদের বাইরে বেরোতে বারণ করছি। যে কোনও জ্বর বা করোনার তৃতীয় ঢেউ প্রতিরোধ করতে আগে থেকেই আমরা প্রস্তুত থাকছি।”
পাশাপাশি বসিরহাট দক্ষিণের চিকিৎসক বিধায়ক চিকিত্সক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রকৃতির নিয়মে ঋতু পরিবর্তন হয়। তাই এই সময় সাধারণ জ্বর হয়। আমরা করোনা মহামারির জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায়। জ্বর ও সঙ্গে অন্য কোনও উপসর্গ থাকলে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে বলছি। কোনও রকম ঝুঁকি নেবেন না, ভয় পাওয়ার কারণ নেই।”
নদিয়া জেলা জুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা একাধিক। সকলেরই উপসর্গ কম-বেশি একই। জ্বর, বুকে ব্যথা, খিচুঁনি। অন্য়ান্য় জেলার মতো শয্য়া-সঙ্কট নদিয়াতে দেখা না গেলেও আক্রান্তের সংখ্য়া বিশেষভাবে কপালে ভাঁজ ফেলেছে চিকিত্সকদের। ইতিমধ্যেই, কল্যাণী জে এন এম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৮৪ জন। কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ৫০জন। তেহট্ট মহকুমা হাসপাতাল ও রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে যথাক্রমে ৫জন ও ৭ জন আক্রান্ত। যদিও, হাসপাতালগুলির তরফে জানা গিয়েছে, যতদিন যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা তত বাড়ছে।
অজানা জ্বরে ধুঁকছে বঙ্গ। রাজ্য জুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। শুক্রবারই উত্তরবঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্য ভবনের চার সদস্যের বিশেষ প্রতিনিধি দল। সূত্রের খবর, চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন, চিকিত্সক পল্লব ভট্টাচার্য, চিকিত্সক বিকাশ মণ্ডল, মাইক্রোবায়োলজিস্ট অধ্যাপক রাজা রায়, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক দীপ্তকান্তি মুখোপাধ্যায়, পেডিয়াট্রিস্ট ড. মিহির সরকার। তবে উত্তরের জ্বরের থেকে দক্ষিণের জ্বরের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনেকটাই আলাদা।
আরও পড়ুন: Viral Fever: আক্রান্ত শতাধিক, চিন্তায় চিকিত্সকেরা, ‘মরসুমি জ্বর’, দাবি স্বাস্থ্য দফতরের!