উত্তর ২৪ পরগনা: বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্যে রেলের সাইট হ্যাক করে ট্রেনের টিকিট জাল করার অভিযোগ। জাল টিকিটের পর্দাফাঁস করল পুলিশ। বসিরহাটের হাসনাবাদ থানার হাসনাবাদ বাসস্ট্যান্ডে বনবিবি সেতুর কাছে একটি সাইবার ক্যাফে জাল টিকিটের ব্যবসা চলছিল। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ওই ব্যবসায়ীকে। উদ্ধার হয়েছে মেশিন।
বছর তিরিশের সাবির আলম মন্ডল সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে রেলের সাইট হ্যাক করে দূর পাল্লার ট্রেনের টিকিট-সহ বিভিন্ন রেলের টিকিট জাল করতেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নজরে পড়ে রেলপুলিশের। বারাসত আরপিএফ তাঁকে গ্রেফতার করে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, শনিবার হাসনাবাদ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সাইবার ক্যাফেতে হানা দেন বারাসাত ও বসিরহাট আরপিএফ এর আধিকারিকরা। দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেসের টিকিট জাল করে এক যাত্রীকে দেন সাবির। তিনি যখন রাজধানী এক্সপ্রেসে ওঠেন, তখন টিকিট পরীক্ষক তারঁ টিকিট দেখে বিষয়টি বুঝতে পারেন।
ওই যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন টিকিট পরীক্ষক। তখন ওই যাত্রী ঘটনাটা খুলে বললে এই চক্রের কথা প্রকাশ্যে আসে। তিনি শিয়ালদহ রেল পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আরপিএফ সাবির আলম মন্ডলকে গ্রেফতার করে।
সাবিরের সাইবার ক্যাফে সিল করে দেওয়া হয়েছে। টিকিট জাল করার সমস্ত মেশিন গুলি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। রেল পুলিশের অনুমান, দীর্ঘদিন ধরে এই সাবির বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিটের কারবারি করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে কোন বড়সড় জাল টিকিট চক্রের কারবার রয়েছে কিনা, সেটাও তদন্ত করে দেখছে আর পি এফ।
সাবিরের বাড়ি হাসনাবাদ থানার আমলানি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢোলটুকারী গ্রামে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাসনাবাদ এলাকায়। তবে ভাইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবিরের দাদা। সাবিরের ভাই আতিয়ার মন্ডলের অভিযোগ, “আমার দাদাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। সে প্রতিবন্ধী, তার পার্শ্ববর্তী দোকানগুলি চক্রান্ত করে তাঁকে ফাসিয়েছে।”
পরিবারের সদস্যের দাবি, “ওর বিরুদ্ধে আগে কোনও অভিযোগ নেই। ওর পায়ের একটা সমস্যা রয়েছে। দোকান করে খায়। ওকে কেন পুলিশ তুলে নিয়ে গেল, জানি না। ওকে ফাঁসানো হয়েছে।”
পাশের দোকানের এক ব্যবসায়ী বলেন, “বছর দুয়েক ধরে এখানে ব্যবসা করছে। তার আগেও অন্য জায়গায় ব্যবসা করত। ওর বিরুদ্ধে আগে কোনও অভিযোগ তো সেরকম শুনিনি। মনে হচ্ছে ওকে চক্রান্ত করেই ফাঁসানো হচ্ছে। গরিব ছেলে, খেটে খাওয়া ছেলে। আগে পান-বিড়ির দোকান ছিল। এখন এই দোকান দিয়েছে।”
আরও পড়ুন: Nandigram Chaos: বিজেপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারির প্রতিবাদ, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ-বনধ নন্দীগ্রামে