উত্তর ২৪ পরগনা: বন্ধ হয়ে গেল ভাটপাড়া রিলায়েন্স জুটমিল। এক লহমায় বেকার হলেন চার হাজার শ্রমিক। ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মিল খোলার দাবিতে কাঁকিনাড়া স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন, বিক্ষোভ তুলতে লাঠিচার্জ করল পুলিশ, হল এক প্রস্থ ধস্তাধস্তি- সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত থাকলে কাঁকিনাড়া স্টেশন। এর জেরে বেশ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায় শিয়ালদহ মেন শাখার ট্রেন চলাচল। পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভ তুলে দেওয়ার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে ট্রেন চলাচল।
বৃহস্পতিবার সকালে কাজে গিয়ে শ্রমিকরা দেখেন কারখানার গেটে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের’ নোটিস ঝুলছে। প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। মালিকপক্ষ কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই কীভাবে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন? একে লকডাউন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন কাজ ছিল না তাঁদের। পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ ছিল। শ্রমিকদের বক্তব্য, আলোচনার মাধ্যমে কোনও এক সমাধান সূত্র বার করা যেত। কিন্তু সেটা না করেই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিকদের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে রেললাইনের ওপর। কাঁকিনাড়া স্টেশনে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। ব্যস্ত সময়ে আটকে পড়ে ট্রেন। লাইনে নেমে স্লোগান দিতে থাকেন শ্রমিকরা। প্রথমে নিত্যযাত্রীদের একাংশ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন।কারণ তাঁদেরও কাজে যেতে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু তাতে কাজ হয় না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রেল পুলিশ।
প্রথমে তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতেও কাজ হয় না। নিজেদের অবস্থানে নাছোড় থাকেন শ্রমিকরা। পরে বাধ্য হয়েই পুলিশ লাঠি চার্জ করে অবরোধ তুলে দেয়। ট্রেন চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
এক শ্রমিক বলেন, ” ২ মাস চলছে, ৬ মাস বন্ধ থাকছে- এই ভাবেই চলছিল। আজকে হঠাৎ গিয়ে দেখি নোটিস দিয়ে দিয়েছে। শ্রমিকরা ঠিকঠাক কাজ করছিলেন। কোনও দাবি দাওয়া ছিল না। ওরা বলেছিল গ্র্যাচুরিটির টাকা দেবে। কিন্তু সেটাও দিল না। এভাবে কি চলতে পারে?”
আরেক শ্রমিক বলেন, “আমরা খুব কষ্ট করেই কাজ করছিলাম। সেভাবে কাজও ছিল না। লকডাউনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছিল। তবুও আমরা ভাবতাম মিল তো খোলা আছে, পরিস্থিতি ঠিক হবে। কিন্তু আজ কাজে গিয়ে দেখি মিলের গেটে নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছে। মালিকপক্ষ আমাদের সঙ্গে একবার কথা বলতে পারত।” যদিও রিলায়েন্স জুটমিল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।