আমডাঙা: ঘূর্ণিঝড় মোখার (Cyclone Mokha) আতঙ্কে ঘুম উড়েছে রাজ্য়ের উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের। তাঁদের জন্য আগেভাগে ত্রাণ সামগ্রীর ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। কিন্তু, সেই ত্রাণের সঠিক ব্যবহার কী আগেও আদৌ হচ্ছে? আমডাঙায় (Amdanga) রয়েছে এক বিরিয়ানির দোকান। পাশে টাঙানো একটা কালো ত্রিপল। আপাতভাবে দেখলে এ তো হাটে-বাজারের স্বাভাবিক ছবি। তাহলে বিতর্ক কোথায়? আসলে ত্রিপলটি দোকানের মালিকের কেনা নয়। ত্রাণের নামে জোগাড় করে দেদার হোটের ব্যবসা চালাচ্ছেন। ঘূর্ণিঝড় মোখার আশঙ্কায় গ্রামে গ্রামে বিনামূল্য ত্রিপল বিলি হচ্ছে, যাতে ঝড়ের দাপটে বাড়ির চালটা উড়ে গেলে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু অন্তত মেলে। কিন্তু, প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারি লোগো লাগানো সেই ত্রিপলের এইভাবে অপব্যবহারে উঠছে নানা প্রশ্ন।
আমডাঙা বিডিও অফিসের মাত্র ৫০০ মিটার দূরেই বিরিয়ানির দোকানটি খোলা হয়েছিল। জানাজানি হতেই তৎপর হয় প্রশাসন। খুলে দেওয়া হয় ত্রিপল। দোকান মালিক রাজা মণ্ডলের সাফাই, “ত্রিপলটা আমডাঙা ব্লকের নয়। ওটা গুমা ২ নম্বর পঞ্চায়েতের। আমাদের দুই পার্টনারের হোটেল। ওর বাড়িতে ছিল টাঙানো। ও বলল যে একটু নিয়ে আসি। আবার বিকালে দিয়ে আসব। সেই মতো আনা হয়। বিরিয়ানি বিক্রি শেষ হয়ে গেলে খুলে দিয়েও আসা হয়।”
আর এক হোটেল মালিক শুভরাজ মণ্ডল বলছেন, “আমার বাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ। বাড়িতে ওটা ছিল। এদিকে নতুন দোকান করেছি তাই কাজের জন্য নিয়ে এসেছিলাম। একদিনই শুধু অল্প সময়ের জন্য এনেছিলাম। অসুবিধা বুঝে আবার ওটা খুলে যেখানে ছিল সেখানে লাগিয়ে দিয়েছি।” কিন্তু, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কীভাবে দোকানটি খোলা হল? এ বিষয়ে আমডাঙার বিডিও সৌমেন বনিক বলছেন, “উনি নিজের বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন। আমরা সেটা দিয়েছিলাম। কিন্তু, তারপর দেখলাম উনি দোকান করেছেন সেখানে লাগিয়েছেন ওটা। সেটা নজরে আসার পর আমরা সেটা খুলে ফেলতে বলি।” ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ি-ঘর উড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকেন বহু মানুষ। এবার মোখা বাংলায় সরাসরি প্রভাব না ফেললেও আমফান, ইয়াশের তাণ্ডবের কথা মাথায় রেখে এখনও শিউরে ওঠেন অনেকে। অনেক সময়ই দেখা যায় যাঁদের সত্যি ত্রাণ দরকার তাঁরা পাচ্ছেন না। সেখানে সেই ত্রাণের ত্রিপলে বিরিয়ানির দোকান খোলা নিয়ে স্বভাবতই একাধিক প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে।