উত্তর ২৪ পরগনা: একুশের বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন একঝাঁক বিধায়ক। পুরভোটে বিজেপির টিকিটে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দিতে গেলে, বিশেষ পদক্ষেপ করা হবে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। জানালেন বিজেপি রাজ্য সহ- সভাপতি তথা সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। কী সেই নিয়ম?
পুরভোটে বিজেপির প্রার্থী হতে গেলে আগে থেকে একটি পদত্যাগপত্র লিখিয়ে টিকিট দেওয়া হবে প্রার্থীদের। যাতে পরে দলবদল করলে তাঁকে কাউন্সিলর পদ ছেড়েই যোগ দিতে হবে। সোমবার বনগাঁর গোপালনগরে এমনই ঘোষণা করলেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
তাঁর কথায়, “আমাদের প্রার্থী হতে গেলে মুচলেকা ঠিক নয়, আমরা এবার একটা রেজিগনেশন লেটার লিখিয়ে রাখব। হাতে লিখিয়ে রাখব। যাতে জেতার পর পালিয়ে না যায়…” তিনি আরও যোগ করেন, “আপনাদের সবার মনে আছে নিশ্চয়ই এখানকার বিধায়ক পালিয়ে গিয়েছেন। তাই একটা সংশয় থাকে। হঠাৎ দে খবেন ভয়ে কিংবা লোভ দেখিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় সবাই চলে যাবে। লোভ-স্বার্থের জন্য চলে যায়। এমনটা যাতে না হয় তাই এই প্রক্রিয়া আমরা করে রাখব”।
এদিন উত্তর ২৪ পরগনা বনগাঁ জেলা বিজেপির অন্তর্গত বনগাঁ, গোবরডাঙ্গা, হরিণঘাটা ,কল্যাণী ও গয়েশপুর পুরসভার বিজেপি কর্মীদের গোপালনগর এর পাল্লা বাজারের একটি লজে প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে বিজেপি। সেই প্রশিক্ষণ শিবিরে এসে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি তথা সাংসদ অর্জুন সিং সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, জেতার পরে বিজেপি ছেড়ে যাতে অন্য দলে না যেতে পারে সেই কারণে প্রার্থীদের আগে থেকে নিজের হাতে পদত্যাগ পত্র লিখিয়ে নেওয়া হবে। যাতে অন্য দলে গেলে কাউন্সিলর পদ থেকে তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়।
আবার তিনি পুরভোট প্রসঙ্গে অভিযোগ করেন, কলকাতা সফিস্টিকেটেড, ব্যবসায়ীদের জায়গা। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী মানুষ থাকেন। তাঁরা তৃণমূলের অত্যাচারের মুখোমুখি হতে চান না। তাঁরা মাঠে নেমে লড়াইটা করতে পারেন না। কিন্তু মফস্বলে এমনটা হবে না। তাই বনগাঁ, বারাসত, নদিয়া- এই সব জায়গায় আমরা লড়াই দেব। তার প্রস্তুতি নিচ্ছি।” অর্জুনের দাবি, বাকি পুরভোটে ভাল লড়াই দেবে বিজেপি। এমনকী বিধাননগর পুরভোটেও তাঁরা ভাল জায়গায় রয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে এদিনের এই প্রশিক্ষণ শিবিরে দেখা যায়নি বনগাঁ উত্তর, গাইঘাটা, হরিণঘাটা এবং কল্যাণীর বিজেপি বিধায়কদের। প্রশ্ন উঠেছে তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে। এটা কি গোষ্ঠীকোন্দলের ফল? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে অর্জুনের অবশ্য যুক্তি, “সকলের আলাদা আলাদা কাজ আছে। সেই কারণে হয়ত আসেননি। বিজেপির মধ্যে তেমন কোনও বিষয় নেই”।
আবার করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের ঘোষণা না মেনে বহু লোক একত্রিত হয়ে কেন মিটিং করছে প্রশ্ন তুলে অর্জুন সিং মন্তব্য করেন পশ্চিমবঙ্গে ধর্ম দেখে লকডাউন করা হয়।
এদিকে অর্জুনের ‘পদত্যাগপত্র’ ঘোষণা নিয়ে তৃণমূলের কটাক্ষ, আর নেতাদের কথায় বিশ্বাস রাখতে পারছে না বিজেপি। এ নিয়ে বনগাঁ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী আলো রানি সরকার বলেন, “দলীয় প্রশিক্ষণ শিবিরে বিজেপি বিধায়করা উপস্থিত না থাকা তাদের নিজস্ব বিষয়। আর বিজেপির টিকিট দেওয়ার আগে পদত্যাগপত্র লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে কারণ বিজেপি কাউকে আর বিশ্বাস করতে পারছে না” ।
আরও পড়ুন: Local Train Timing: ৭টা নয়, শেষ লোকাল ট্রেন ছাড়বে রাত ১০টায়, নয়া নির্দেশিকা নবান্নের