উত্তর ২৪ পরগনা: ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ ফাঁড়ি। তারপরেও আটকানো যায়নি ‘হামলা’। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে দুয়ারে সরকারের শিবিরের কাজ চলাকালীন দুই দুষ্কৃতী মোটরবাইকে এসে বোমাবাজি করে ও গুলি চালায় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা নাগাদ কামারহাটিতে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। যদিও, ঘটনায় কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এদিন, সন্ধেবেলা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে দুয়ারে সরকার শিবিরের কাজ চলছিল। ফলে অনেক আবেদনকারীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেইসময় আচমকা দুই দুষ্কৃতী মোটরবাইকে এসে দলীয় কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলি চালায় ও বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। তারপরেই তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। বোমাবাজির জেরে আহত হন মোট ছয়জন। তাঁদের মধ্যে দুজন মহিলা ও একজন শিশুও রয়েছে। আহতদের সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয়রা। এলাকায় নামানো হয়েছে র্যাফ। মাত্র ১৫ গজ দূরে যেখানে পুলিশ ফাঁড়ি সেখানে কী করে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক বাসিন্দার কথায়, “এই প্রথম নয়, প্রায়ই এখানে ঝামেলা হবে। দুই দলের মধ্যে ঝামেলা, আর ভুগব আমরা সাধারণ মানুষ। আচমকা বাইকে করে এসে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে বোমাবাজি করে চলে গেল। আমরা এসেছিলাম দুয়ারে সরকারের কাজে। ফর্ম জমা দিতে। তারমধ্যে এই ঘটনা! পরে দেখি চারজন জখম হয়েছে। বাচ্চাদের পর্যন্ত রেয়াদ করছে না।”
বোমাবাজির ঘটনায় ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, “কামারহাটিতে বিজেপির কোনও জায়গা নেই। তাই বিজেপির ঘাড়ে দোষ দিলে হবে না। ওখানকার তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই।”
বোমাবাজির ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে একাধিক। প্রথমত, দুয়ারে সরকার শিবিরের আয়োজন কেন দলীয় কার্যালয়ে হবে? দ্বিতীয়ত, নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও কীভাবে সেখানে সরকারি কাজ চলছিল? এই হামলার নেপথ্যেই বা কারা? এ প্রসঙ্গে, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, “কামারহাটিতে কোনও দুষ্কৃতীদের রেয়াদ করা হবে না। গোটা এলাকা সিসিটিভি দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। সিসিটিভিতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে কোন সমাজবিরোধীরা এই কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।”
কিন্তু, কী করে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে এইভাবে দুয়ারে সরকার শিবিরের কাজ চলছিল? সে প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই কাজ করছি। ওখানে প্রশাসনিক আধিকারিকরাই ছিলেন। কিন্তু যেহেতু করোনা চলছে সেই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই বেশ কিছু মহিলা আমাদের কার্যালয়ে গিয়ে বসেছিলেন। এছাড়া, আমাদের দলের কর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত যাঁরা, তাঁদেরই কিছুজন উপস্থিত ছিল। আমি খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছচ্ছি।” আরও পড়ুন: ২০ মিনিট থানায়, বিষ্ণুপুরের ‘কত্তাবাবু’-র সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাত্’ সৌমিত্রর!