উত্তর ২৪ পরগনা: বনগাঁ পুরসভার ভোটের প্রস্তুতি বৈঠক। বুধবার ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক ডেকেছিল বিজেপি। গান্ধীপল্লিতে এই বৈঠক হয়। কিন্তু জল্পনা বাড়িয়ে এদিনের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। উত্তর ২৪ পরগনা বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির বনগাঁ গান্ধীপল্লীতে অবস্থিত জেলা পার্টি অফিসে বুধবার বিকেলে বনগাঁ পুরভোট নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। ২২টি ওয়ার্ডকে দু’টি ভাগে বিভক্ত করে বনগাঁ উত্তর ও দক্ষিণ পুরমণ্ডলের বৈঠকে নানা বুথ থেকে কর্মীরা এলেও বৈঠকে দেখা যায়নি বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়াকে। যদিও এই প্রসঙ্গে বনগাঁ বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস জানান, বিধায়কের অনেক কাজ থাকে। হয়ত তিনি তাতেই ব্যস্ত আছেন। সে কারণেই বৈঠকে থাকতে পারেননি। যদিও এই অনুপস্থিতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি অশোক কীর্তনিয়া।
ফেব্রুয়ারিতেই বকেয়া ১০৮টি পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা। সেইমতো বনগাঁতেও ভোট হবে। আগামী মাসে ভোট হলে হাতে সময় একেবারেই নেই। সেদিক থেকে বুধবারের এই বৈঠক বিজেপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সেই বৈঠকে এলাকার বিধায়কের অনুপস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে এদিনের বৈঠকে ছিলেন না দেবদাস মণ্ডল। তিনি বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সম্পাদক। এই দুই অনুপস্থিতি বিশেষ নজর কেড়েছে।
প্রসঙ্গত, জেলায় রামপদ দাস সংগঠনের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে একাধিক নেতাকে ‘বেসুরো’ হতে শোনা গিয়েছে। মূলত রাজ্য কমিটি ও জেলা কমিটি নিয়ে তাঁরা সরব। এই তালিকায় নাম রয়েছে অশোক কীর্তনিয়া, দেবদাস মণ্ডলেরও। ফলে রামপদ দাসের পৌরহিত্যে বৈঠকে বিধায়ক কিংবা নেতার অনুপস্থিত থাকার একটা আভাস পাওয়া গিয়েছিল।
কিন্তু বুধবারের বৈঠকও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টি বিধানসভায় বিজেপি জয়লাভ করে। ফলে এবার বনগাঁ পুরসভা তাদের পাখির চোখ হওয়ার কথা। সেই জায়গায় বিধায়ক ও প্রাক্তন সম্পাদকের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বনগাঁ বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস অবশ্য বলেন, ব্যস্ততার কারণে বিধায়ক এদিন থাকতে পারেননি। তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ বিরোধীরা। বনগাঁ তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী আলোরানি সরকারের গলায় কটাক্ষের সুর। তিনি বলেন, বিজেপি প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না বলে ভয় পাচ্ছে। বনগাঁয় ওদের লোকজনও নেই। তাই বিধায়ক আর বৈঠকে থাকছেন না।
আলোরানি সরকারের কথায়, “বিজেপি আতঙ্কিত। প্রার্থী দেওয়ার মানুষ খুঁজে পাচ্ছে না। যে কারণে বিধায়ক বৈঠকে থাকছেন না। কিছুদিন আগে শুনলাম সোশাল মিডিয়ার কী গ্রুপ থেকে লেফট করেছেন। আসতে আসতে হারিয়েই যাবে। লোকজন নেই, প্রার্থী দিতে পারবে না।” অন্যদিকে রামপদ দাসের বক্তব্য, “২৭ ফেব্রুয়ারি পুরভোট ধরেই আমরা এগোচ্ছি। তাই বনগাঁ পুরসভার বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠক ছিল। ১১ ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রথমে বৈঠক হল। পরে আরও ১১ ওয়ার্ডের প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠক হবে। আমাদের বিধায়ক ব্যস্ত মানুষ। দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকে আসবেন। আর দেবদাসদা উত্তর মণ্ডলের। উত্তর মণ্ডলের বৈঠক এখনও হয়নি।”