উত্তর ২৪ পরগনা: প্রজাতন্ত্র দিবসেও ভাটপাড়ায় এড়ানো গেল না অশান্তি। সম্মুখ সংঘর্ষ না হলেও রাজনৈতিক দলগুলির দাপট দেখল ভাটপাড়ার বাসিন্দারা। প্রায় সারাদিন জুড়েই ভাটপাড়া পৌর এলাকায় দেড়শো-দু’শো বাইক মিছিল দেখা গেল। ঘটনায়, ব্যারাকপুর সাংসদের দাবি, ক্ষমতা প্রদর্শন করতেই তৃণমূল (TMC)এই মিছিল করেছে।
সাংসদ অর্জুন সিং অভিযোগ করে বলেন, “ভাটপাড়ায় কার কত ক্ষমতা, সেই ক্ষমতার প্রদর্শনী চলছে। তৃণমূলের কত ক্ষমতা তা দেখাতেই এই প্রদর্শনী। এভাবে তো প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয় না।”
অন্য়দিকে, ভাটপাড়ার পুরপ্রশাসক গোপাল রাউতের দাবি, তাঁর গাড়ি ছোট ছোট গলিতে ঢুকবে না। তাই বাইকে চড়েই মিছিল করার পরিকল্পনা করা হয়। তিনি নিজেও অসুস্থ। তাই পায়ে হেঁটে মিছিল করাও সম্ভব ছিল না। তাই বাইকেই মিছিল করেন তিনি।
বুধবারের সকালে দেখা যায়, মহা সাড়ম্বরে কখনও ১৫০, কখনও ২০০ কখনও বা ১০০ টি বাইক গোটা ভাটপাড়ায় মিছিল করে ঘুরছে। অভিযোগ, বাইক বাহিনী তৃণমূলের। শাসক দলেরই কর্মী সমর্থকেরা মিলে এই বাইক মিছিল করে বলে অভিযোগ। একে করোনা, তায় প্রজাতন্ত্র দিবসে কী করে এভাবে বাইক নিয়ে মিছিল করা যায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুুলছেন এলাকাবাসীই।
স্থানীয়রা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলির এই দাপটে তাঁরা অস্থির। এভাবে, আদপে আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। কোনও নিরাপত্তা তো জোটেই না, উপরন্তু আরও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তাঁরা। রাজনৈতিক ফায়দার কারণেই নেতাদের এত আনাগোনা বলেই দাবি তুলেছেন কেউ কেউ।
রবিবার সকালে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেই অনুষ্ঠানে নেতাজির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করতে যান ভাটপাড়ার তৃণমূল সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ছেলে ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন সিং। মালা দিয়ে বেরোনোর সময় তাঁর পিছনে তিন-চারজন ধাওয়া করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন অর্জুন সিং। তারপরই অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে ধস্তাধস্তি লেগে যায়। বোমাবাজিও শুরু হয়। অর্জুন সিংকে ঘিরে ইট বৃষ্টির অভিযোগও ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি সাংসদকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি ও বোমাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায় দলীয় কর্মীরা।
বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ এই ঘটনায় নিষ্ক্রিয় ছিল। পরিস্থিতি খারাপ দেখে অর্জুন সিংয়ের নিরাপত্তা রক্ষীরা বন্দুক বের করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। শেষে শূন্যে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় সিআইএসএফ। নেতাজি জয়ন্তীতে রীতিমত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ভাটপাড়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস চালায় পুলিশ। ফের প্রজাতন্ত্র দিবসেও এভাবে বাইক মিছিল হওয়ায় আবারও প্রশ্নের মুখে ভাটপাড়া প্রশাসন।
আরও পড়ুন: Sukanta Majumder on Buddhadeb Bhattacharya: ‘বুদ্ধবাবুর পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে’