গয়না বিক্রি করে দিতে হয়েছে ‘কাটমানি’, তাও মিলছে না প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা

TV9 Bangla Digital | Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Aug 25, 2021 | 12:03 PM

এমনই অভিযোগ উঠেছে দেগঙ্গায়। কেউ গোরু বিক্রি করে, কেউ গয়না বিক্রি করে কাটমানি দিয়েছে বলে অভিযোগ।

গয়না বিক্রি করে দিতে হয়েছে কাটমানি, তাও মিলছে না প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা
অভিযোগ উঠেছে বারাসতে

Follow Us

বারাসত: ফের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার চৌরাশি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এই আভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। অভিযোগ, এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ২০ জনেরও বেশি এই যোজনার টাকা পেয়েছেন। তাঁদের অ্যাকাউন্টে আসছে বাড়ি তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় ওই যোজনার টাকা। আর আবাস যোজনার সেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আসতেই কাটমানি চেয়ে বসেছেন পঞ্চায়েত সদস্যরারা। অভিযোগ উঠেছে চৌরাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।

চৌরাশি মল্লিক পাড়ার বাসিন্দা শাহানারা বিবি ও আলতাব মন্ডল দুজনে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন। শাহানারা বিবি প্রথম কিস্তির টাকা পেলেও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য তাঁর কাছ থেকে কাটমানি চেয়েছেন। বলা হয়েছে কাটমানি দিলে তবেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাবেন তিনি। এরপরে গরু বিক্রি করে ৫০০০ টাকা কাটমানি দিয়েছেন শাহানারা বিবি। তা সত্ত্বেও বাকি টাকা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

আলতাফ মন্ডলেরও একই অভিযোগ। তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের কানের দুল বিক্রি করে ৫০০০ টাকা কাটমানি দেওয়া সত্বেও তাঁর বাড়ি তৈরির প্রাপ্য টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইউনুস মন্ডল ও বক্কার মন্ডলের অভিযোগ, তাঁরা বিরোধী দল করায় দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আটকে দিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত। এ নিয়ে ব্লক আধিকারিক থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি।

এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পারভীন সুলতানা। তিনি জানান, এ ধরনের কোনও লিখিত অভিযোগ আসলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে তাঁর কাছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে আধার কার্ডের সঙ্গে নাম মিলছে না, তাই বাড়ি তৈরি আটকে আছে। তবে এই অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই টাকা দিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এই অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি বলেন, ‘দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে দায়িত্ব দিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ দিকে এই ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা তরুন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘এটা তৃণমূলের সংস্কৃতি। তৃণমূল তোলাবাজি, কাটমানির দল। সাধারণ মানুষের থেকে মোটা অঙ্কের কাটমানি নিয়ে এ ভাবে তাদের তোলাবাজির রাজত্ব চলছে।’ আর পুরো ঘটনায় দেগঙ্গায় রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।

কয়েকদিন আগে একই ঘটনা ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে। মারধর করে, জোর করে ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে এক আদিবাসী বৃদ্ধার আবাস যোজনার টাকা। এই ঘটনায় তিন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বৃদ্ধার পরিবার। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। প্রতি কিস্তিতে তাঁদের ভাগ দিতে হবে চড়াও হয়েছিল ওই তৃণমূল নেতারা। আরও পড়ুন: নম্র স্বভাব, কাজের ছেলে, হেল্পফুলও! কর্মচারীকে বাড়িতে আশ্রয় দেন মালিক, দুঃসাহসিক পরিণতি

Next Article