অরিজিৎ দে
দমদম: রাজ্যের বেহাল রাস্তা গুলি দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এমনকী মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর (Harikrishna Dwibedi) পক্ষ থেকে প্রশাসনের শীর্ষস্তরে নির্দেশিকা গিয়েছিল। সরকারের শীর্ষস্তর থেকে বলা সত্ত্বেও পরিস্থিতি যে খুব একটা বদলায়নি, তা শহর সংলগ্ন এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার অবস্থা দেখলেই খানিকটা স্পষ্ট হবে। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দমদম রোডের অবস্থা বেহাল। দমদম রোড (Dum Dum Road) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। একদিকে এই রাস্তা যেমন কলকাতা প্রবেশের পথ, অন্যদিকে এই রাস্তা ধরে প্রচুর লোক বিমানবন্দরে যাতায়াত করেন। এহেন দমদম রোডের বাগজলা খাল সংলগ্ন এলাকায় বছর খানেক আগেই ধস নেমেছিল। তড়িঘড়ি প্রশাসনের তরফে দমদম রোডে বাস, লরিসহ ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সেই থেকে বাস চলাচলে নিষেধের সূত্রপাত, তারপরের দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দমদম রোডে বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। দমদম হনুমান মন্দিরের নিকটে বাগজলা খাল সংলগ্ন দমদমের রোডের যে অংশে ধস নেমেছিল, সেই নির্দিষ্ট জায়গাটি কংক্রিটের ছোট দেওয়াল তুলে দেওয়ার ফলে রাস্তা সংকীর্ণ হয়েছে, ফলে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই আছে। তারমধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস বন্ধ থাকায় স্থানীয়দের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
স্থানীয়দের মতে, সকালের দিকে অফিস টাইমে পরিস্থিতি সব থেকে বেশি খারাপ থাকে। কারণ সেই সময়ে দমদম রোডের ওপরে বাজার বসার কারণে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে। দমদম রোডের এই বেহাল অবস্থা এবং বাস চলাচল বন্ধ নিয়ে স্কুল শিক্ষিকা ইন্দিরা দে প্রতিনিয়ত সমস্যার মধ্যে পড়েন। তিনি বলেন, “আগে আমি রোজ বাস করেই স্কুলে যাওয়া আসা করতাম। দীর্ঘদিন ধরে বাস বন্ধ। অটো করে স্কুলে যেতে হয়। অফিস টাইমে অটো ধরার জন্য সুবিশাল লাইন থাকে, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে তবে অটো মেলে।” একই অবস্থার শিকার তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত অনির্বাণ ঘোষ ও তাঁর পরিবার। অনির্বাণ বলেন, “ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলার কারণে আমি এখন নিয়মিত অফিস যাই না ঠিকই। তবে আমার মা’কে প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতে হয়। মায়ের বয়স হয়েছে, তার মধ্য পায়ে ব্যথা। এই অবস্থায় বাস ধরার জন্য অনেক দূর যেতে হয়। খুবই সমস্যা হচ্ছে।”
রাস্তার এই বেহাল অবস্থার কারণ ও বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে এই স্বীকার করে নিয়ে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার চেয়ারম্যান কস্তুরী চৌধুরী বলেন, “আমরা সবে দায়িত্ব নিয়েছি। পৌরসভার সব আধিকারিকদের সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠক হয়েছে। টেন্ডার ও হয়ে গিয়েছে। ওখানে থাকে একটি কম্প্যাক্টর মেশিন স্থানান্তকরণ নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। স্থানীয় পুর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। আমি যতদূর জানি, রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। তবে এই কাজ শেষ হতে সময় লাগবে।” যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বা মুখ্যসচিবের মতো শীর্ষস্তর থেকে দ্রুত রাস্তা মেরামতের বার্তা এসেছিল, সেখানে দীর্ঘ এক বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবস্থা কেনও বেহাল সেই নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। এর পিছনে কী রয়েছে গাফিলতি না কি অর্থের অভাব, প্রশ্ন অনেকের।
আরও পড়ুন National Herald Case: ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডির দফতরে হাজিরা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার