উত্তর ২৪ পরগনা: সেভাবে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট ছিল না। তাই আলমারিতেই রেখেছিলেন ঘর বানানোর জন্য সরকারের দেওয়া টাকা, ছিল মেয়ের বিয়ের জন্য তৈরি করে রাখা গয়নাগাটিও। কিন্তু এক নিমেশে সর্বস্ব খুইয়েছে পরিবার। ফুলকি থেকে বিধ্বংসী আগুন, আর তাতে সর্বস্ব খোয়ালেন বসিরহাটের ভবেশ গায়েনের পরিবার। নগদ টাকা, গয়না-সহ কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। সব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ভবেশ গায়েনের পরিবারের সদস্যরা। ঘটনাটি ঘটেছে
বসিরহাটের হেমনগর কোস্টাল থানার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৪৭ নম্বর বুথের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে ভবেশ গায়েনের বাড়িতে আগুন লাগে। ঘুমিয়ে থাকার জন্য শীতের রাতে আগুনের আঁচ সেভাবে বুঝতে পারেননি তাঁরা। যতক্ষণে বুঝেছেন, ততক্ষণে আগুনে ঝলসে গিয়েছে অনেক কিছুই। বিছানার গদিতে আগুন লাগার পরই তাঁরা টের পেয়েছেন। তাঁদের চিৎকারেই ঘুম ভাঙে প্রতিবেশীদের। যে যাঁর বাড়ি থেকে জল এনে সাধ্যমতো চেষ্টা করেন আগুন নেভানোর। কিন্তু যতক্ষণে আগুন নিভিয়েছেন, ততক্ষণে পুড়ে গিয়েছে অনেক কিছুই।
আলমারিতে ছিল টাকার বান্ডিল, নগদ দু’লক্ষ টাকা। পুড়ে কালো হয়েছে তা। গয়না পুড়েছে, আসবাবপত্রও ঝলসে গিয়েছে। দিনমজুরি আর চাষবাসের আয় থেকে ধীরে ধীরে ঘর বানানোর জন্য টাকা জমিয়েছিলেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনারও টাকা পেয়েছিলেন, পুড়েছে সবই।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বাড়ির ইলেকট্রিক বোর্ড থেকে শর্ট সার্কিটের জেরেই আগুন লেগেছে। আগুন লাগার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোনার গয়নার পাশাপাশি বাড়ির দলিল, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও, ছেলেমেয়েদের বই খাতা সবই পুড়ে ছাই হয়েছে।
সব হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নীচে ভবেশ গায়েনের পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী। ঘটনাস্থলে যান কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শ্যামল মণ্ডল ও বর্তমান প্রধান দীপ্তি মণ্ডল। এই মুহূর্তে ভবেশ গায়েনের পরিবারের জন্য অস্থায়ীভাবে পঞ্চায়েতের থেকে ত্রিপল দিয়ে তাবুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভবেশ গায়েনের স্ত্রী বলেন, “ঠাকুর আমার ভাগ্যটা কী খারাপ, কী থেকে কী হল, সেটাই বুঝতে পারছি না। সব হারালাম।”