উত্তর ২৪ পরগনা: ভরা বর্ষায় উপচে পড়ছে টলটলে ইছামতী (Icchamati River)। সেখানেই মাছ ধরতে গিয়েছিলেন কাকা-ভাইপো। ভরা নদীতে ঘটল বিপত্তি। ইছামতীর জলের তোড়ে ভেসে গেলেন কাকা। জলে পড়ে যান ভাইপোও। তবে কোনও মতে সাঁতরে পার পান তিনি। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানার বাংলানি গ্রাম পঞ্চায়েতের মালোপাড়ার ঘটনা।
বছর পঞ্চাশের (৫০) অশোক হালদার ও তাঁর ভাইপো বছর পঁয়ত্রিশের (৩৫) বিষ্ণুপদ হালদার ইছামতী নদীতে জাল নিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। হঠাৎই জল বেশ কিছুটা বেড়ে যায়। এরপরই নিজেকে সামাল দিতে না পেরে জলের তোড়ে ভেসে যান অশোক। এদিকে কাকা ভেসে যাচ্ছেন দেখে, ঝাঁপ দেন ভাইপো। কিন্তু ততক্ষণে হাত ফসকে কাকা অনেকটা দূরে চলে গিয়েছেন। তাই আর ঝুঁকি না নিয়ে সাঁতরে ডাঙায় ওঠেন বিষ্ণুপদ।
এরপরই বিষয়টি স্বরূপনগর থানায় জানানো হয়। তারাই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে নিয়ে ইছামতীর ধারে পৌঁছয়। বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাঁচজনের দল, স্পিডবোট নামিয়ে ইচ্ছামতী নদীতে তল্লাশি চালানো হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরিও নামানো হয়েছে ইচ্ছামতীর বুকে।
শনিবার সকাল থেকেই চলছে খোঁজ। যে জালটি নিয়ে ইছামতীতে মাছ ধরছিলেন ওই প্রৌঢ়, সেটিকে পেয়েছে ডুবুরি। কিন্তু জালের মালিকের এখনও খোঁজ নেই। এই ঘটনায় আতঙ্কে মৎস্যজীবীর পরিবার। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ইছামতীও কানায় কানায় ভরা। ফলে উদ্বেগ, আশঙ্কা বাড়ছে। তবে প্রাথমিক ভাবে এলাকার লোকজন মনে করছেন, নদীর জলে ভেসে হয়ত বাংলাদেশে চলে যেতে পারেন অশোক হালদার। সেদিক মাথায় রেখেই বিপর্যয় মোকাবিলা দল তল্লাশি চালাচ্ছে।
বিষ্ণুপদ হালদার বলেন, “শুক্রবার আমি আর কাকা গিয়েছিলাম মাছ ধরতে। কাকা বলল ওপারে চল ভাল মাছ পাওয়া যায়। দু’জনই একসঙ্গে যাচ্ছিলাম। কাকা বলল তুই এগিয়ে যা। আমি আসছি। হঠাৎ দেখি কাকা খাবি খাচ্ছে। আমি হকচকিয়ে যাই। কিন্তু চেষ্টা করেও কাকাকে তুলতে পারিনি। আমিও সাঁতার কেটে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। একটা নৌকা আসছিল, কিন্তু ওটা আসতে আসতে আর কাকার দেখা পাইনি।”
নিখোঁজ অশোক হালদারের মেয়ে প্রিয়াঙ্কার কথায়, “দাদার সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিল। তার পর আর ফেরেনি। খাপলা জাল হাতে জড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। দাদা, বাবা দু’জনই জলে নেমেছিল। দাদা উঠতে পারলেও বাবা উঠতে পারেনি।”
আরও পড়ুন: Covid in Bengal: পর পর চারদিন ৭০০ পার সংক্রমণ, পুজোর মুখে বাংলায় ফের করোনার বাড়বাড়ন্ত