কালনা : খুনের প্রকৃত কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। পানিহাটির কাউন্সিলর অনুপম দত্তের সঙ্গে কার শত্রুতা ছিল, কেনই বা তাঁকে মারতে কয়েক লক্ষ টাকা সুপারি দেওয়া হল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে ওই খুনের ঘটনায় একের পর এক তথ্য সামনে আসছে। কালনা থেকে বাপি ওরফে সঞ্জীব পণ্ডিত নামে যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তিনি লুকিয়ে ছিলেন কালনায়। সেখান থেকেই তাঁকে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। যেখানে তিনি গা ঢাকা দিতে চেয়েছিলেন, সেটা আসলে তাঁর খুড়তুতো বোন মাম্পি মণ্ডলের শ্বশুরবাড়ি। মাম্পি দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে তেমন কোনও সম্পর্ক ছিল না খুড়তুতো দাদা বাপির। গত ১৮ বছরে কোনও দিনই তাঁর বাড়িতে আসেননি বাপি। তিনি ঘুণাক্ষরেও খুনের কথা জানতেন না বলেও দাবি মাম্পির।
মাম্পি পণ্ডিত ঘূণাক্ষরে টের পাননি বাপির কার্যকলাপ। তিনি জানিয়েছেন, সোমবার অর্থাৎ ঘটনার পরের দিন রাতে হঠাৎ সপরিবারে সঞ্জীব পণ্ডিত ওরফে বাপি ও তাঁর ভাই প্রসেনজিৎ পণ্ডিত তাঁদের বাবা মাকে নিয়ে পিসতুতো বোনের বাড়িতে হাজির হন। ব্যাগপত্র নিয়েই যান তাঁরা।
সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না খুড়তুতো বোন মাম্পি। তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন বাপি সপরিবারে হাজির। অনেক দিন পর দেখা, তাই কুটুম্বিতায় খামতি রাখেননি কোনও। মাম্পিকে বাপি জানান তাঁরা কালনার একটি মন্দিরে ঘুরতে এসেছিলেন। আপাতত কদিন তার বাড়িতেই থাকবে। ১৮ বছর পর দাদারা বাড়িতে আসায় অবাক হলেও খুশিই ছিলেন তাঁর বোন। তবে তাঁর বোন টেরও পাননি কী ঘটনা ঘটিয়ে এসেছেন ভাই সঞ্জীব।
রাতে খাওয়া-দাওয়ার পরে পরিবারের সঙ্গে গল্প-গুজব করে ঘুমোতে যান তাঁরা। রাত দুটোর সময় পুলিশ এসে হাজির ওই বাড়িতে। তারপরই সমস্ত ঘটনা পরিষ্কার হয়ে যায়। সেখান থেকেই পুলিশ বাপি ও প্রসেনজিতকে গ্রেফতার করে। আর এই ঘটনার পর থেকে কালনায় বাপির খুড়তুতো বোনের পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সঞ্জীব ওরফে বাপিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে । পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই খুনের সঙ্গে সঞ্জীব পণ্ডিত যুক্ত রয়েছেন। বাপির বোনের বক্তব্য, ‘আমরা যদি জানতাম যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাহলে ভাইকে আশ্রয় দিতাম না।’
গত রবিবার অনুপম দত্ত খুন হন। আর সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমেই গ্রেফতার করা হয়েছিল শম্ভুনাথ পণ্ডিত নামে এক দুষ্কৃতীকে। তাঁকে জেরা করে আরও দুজনের নাম জানতে পারে পুলিশ। পরের দিন রাতে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ও খড়দহ থানার পুলিশ আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। ট্রেনের টিকিটের সূত্র ধরেই গ্রেফতার করা হয় বাপিদের। শম্ভুনাথেরই মাসির ছেলে বাপি ও প্রসেনজিৎ পণ্ডিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ।