অশোকনগর: টিউশন থেকে সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরছিল নাবালিকা ছাত্রী। পথে জোর করে টোটোতে তুলে নিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশের এক জঙ্গলে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল ২ জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওই নাবালিকার এক সহপাঠী এবং টোটোচালকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি সরব অত্যাচারিতা নাবালিকার দাদা। ইতিমধ্যেই এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও অপর অভিযুক্ত এখনও পলাতক। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের নয়াসমাজ এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা। ঘটনা ঘিরে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বিরোধীরা। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও ছড়িয়েছে।
শিক্ষক দিবসের দিন টিউশন বাড়ি ফেরার পথে অশোকনগর নয়াসমাজ এলাকায় ওই নাবালিকার পথ আটকায় তার এক সহপাঠী এবং টোটো চালক যুবক। অভিযোগ, নাবালিকাকে টোটোতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের একটি জঙ্গলে। সেখানে ওই দুই অভিযুক্ত নাবালিকার উপরে চালায় যৌন নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। উপস্থিত বুদ্ধিতে চিৎকারের ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে কোনও মতে পালাতে সক্ষম হয় ওই ছাত্রী। রাতে বাড়িতে গিয়ে গোটা ঘটনাটি পরিবারের লোকেদের জানায় নাবালিকা। এর পর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিন গভীর রাতে অশোকনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
দুই অভিযুক্তের মধ্যে নাবালিকার সহপাঠী এক নাবালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে সল্টলেকের জুভেনাইল কোর্টে পাঠানো হয়। বুধবার গোপন জবানমন্দির জন্য নাবালিকাকেও কোর্টে পাঠানো হয়। তবে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত টোটো চালক যুবক ঘটনার পর থেকেই ফেরার। যদিও তাঁর বাড়ির সামনে রাখা রয়েছে টোটোটি। ছেলে কোথায় তা অভিযুক্ত বাবার কাছে জানতে চাওয়া হলে, অভিযুক্তের বাবা জানিয়েছেন তাঁর ছেলে নিখোঁজ। তিনি আর কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন।
বুধবার এই গোটা ঘটনার বিবরণ জানিয়ে দিল্লিতে থাকা নাবালিকার দাদা সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশ প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন এবং পলাতক অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলেছেন। বিজেপি এবং সিপিএম এই ঘটনায় প্রশাসনের ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলেছেন। যদি বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকারের। তিনি বলেছেন, “অভিযুক্তের শাস্তির দাবি আমরাও জানাচ্ছি। প্রশাসন কাজ করছে। পুজোর সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটে। পুলিশের নজরদারি বাড়ানো দরকার। পুরসভার তরফে একটি গাড়ি দেওয়া হবে পুলিশকে, যাতে বাড়তি নজরদারি চালানো সম্ভব হয়।”
গোটা ঘটনা নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন নাবালিকার পরিবার। কারণ নাবালিকা এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবেন। সামাজিক লোকলজ্জা কাটিয়ে কী ভাবে ওই বাইরে বেরোবেন তা নিয়েই চিন্তায় ওই নাবালিকা। মূল অভিযুক্ত এখনো ফেরার থাকার বিষয়েও নাবালিকার পরিবার আতঙ্কিত বলে জানিয়েছেন।