উত্তর ২৪ পরগনা: নৈহাটি পৌরসভার দুর্নীতি নিয়ে পৌরসভার গেটে সিপিএমের সভা। আর তা ঘিরে উত্তেজনা। সিপিএমের সভার পালটা জমায়েত করে তৃণমূল। তা ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটিতে। এলাকায় বিশাল বাহিনী।
মঙ্গলবার নৈহাটি পুরসভার গেটের সামনে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল সিপিএমের। মূলত পৌরসভার দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। নির্দিষ্ট সময়েই বাম কর্মী সমর্থকরা পৌরসভার সামনে জড়ো হন। অভিযোগ, সিপিএমের সময়েই তৈরি হয় উত্তেজনা। কারণ ওই এলাকাতেই পাল্টা জমায়েত করেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা।
জানা যাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে দু’পক্ষের কর্মী সমর্থকরা একে অপরের উদ্দেশে কটূক্তি করতে থাকেন। তা নিয়েই বচসায় জড়ায় দু’পক্ষ। আর তা থেকেই উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
এলাকায় নামানো হয় র্যাফ। এদিনের বিক্ষোভের ধরনা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির নেতা শতরূপ ঘোষ। ছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য গার্গি চট্টোপাধ্যায়।
সিপিএমের অভিযোগ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হতেই তৃণমূল ভয় পেয়েছে। তাই ওঁরা পালটা জমায়েত করেছেন। সিপিএম নেতা গার্গী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তো তাণ্ডব করতে আসিনি। এসেছি দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে। তারপরও যদি পুলিস এসে আমাদের ধরে তাহলে আমার তো কিছু বলার নেই। ওরা ভয় পাচ্ছে কেন? গ্রেফতার হচ্ছে। কিন্তু চুনো পুটিদের গ্রেফতার করে কী হবে? রাঘব বোয়ালদের গ্রেফতার করতে হবে।”
তবে সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ জানান, এই মিটিং রাজ্য জুড়ে চলছে। স্লোগান ‘চোর ধরো জেল ভরো’। তাই এই মিটিং চলছে, চলবে। তাঁর কথায়, “চোরকে চোর বললে তো গায়ে লাগবেই। আমরা গৃহস্থ, চোরকে চোর বলবই। নৈহাটি পৌরসভায় ব্যাপক দুর্নীতি চলছে। এমন কোনও পৌরসভা নেই, যেখানে চুরি হয় না। নৈহাটি পৌরসভাও তার ব্যতিক্রম নয়।” স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, “আমরা কোনও জমায়েত করিনি, জমায়েত করলে দশ হাজার লোক হত। ডায়নোসোর হয়ে যাওয়া, বিলুপ্ত প্রায় পার্টিকে বাইরে বেরিয়ে দেখতে এসেছি কেবল। আমরা জমায়েত করিনি। যারা দুর্নীতিতে যুক্ত, তারা এখন জেলে।”
প্রসঙ্গত, নৈহাটি পুরসভা পরিচালিত দুটি উৎসব ভবন এবং দুটি পার্কের কয়েক কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠছে শাসক দল পরিচালিত পৌরবোর্ডের বিরুদ্ধে। পুরসভার কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা নকল বিল বানিয়ে গ্রাহকদের পরিষেবার লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করত। পৌর অডিটে ধরা পড়ে বিষয়টি।
নৈহাটির পৌরসভা অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তদন্ত চলছে। তিন জন গ্রেফতার হয়েছে।” এই অভিযোগ স্বীকার করে নিলেন পৌরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়। অশোক বলেন, “কয়েক লক্ষাধিক টাকার গোলমাল হয়েছে, একথা অস্বীকারের জায়াগা নেই।”