বসিরহাট: ছাদে জামা-কাপড় শুকাতে দিয়েছেন? কিন্তু, খেয়াল করেননি যে বৃষ্টি এসেছে। একটু শুকনো হতে না হতেই ফের ভিজে ঢোল সবকিছু। মাথায় হাত আপনার। প্রায়শই এই সমস্যার মুখে পড়ি আমরা। কিন্তু, বসিরহাটের দুই খুদের চেষ্টায় এবার সেই সমস্যারই সমাধান হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। দূর হতে চলেছে চিন্তা। বৃষ্টি এলে আর তাড়াহুড়ো করে ছাদে গিয়ে শুকাতে দেওয়া জামাকাপড় তুলতে হবে না। বৃষ্টির ফোঁটা পড়লেই সেগুলি নিরাপদে পৌঁছে যাবে স্মার্ট ঘরে। আবার বৃষ্টি ধরে এলেই সেগুলি ফের খোলা আকাশের চলে যাবে। শুধু তাই নয়। সন্ধ্যা নামতেই ঘরে নিজের থেকেই জ্বলে উঠবে আলো। ফের সূর্য উঠলে আপনা থেকেই বন্ধ হবে।
কর্মক্ষেত্র থেকে দৈনন্দিন কোনও কাজ, বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গেই দিনে দিনে ক্রমেই বাড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্সের ব্যবহার। এবার এই এআই-কে কাজে লাগিয়েই গৃহস্থলির সমস্যার সমাধান করতে মাঠে নেমে পড়ল বসিরহাটের বিজ্ঞানমনষ্ক দুই ছাত্র। বসিরহাট মহকুমার বসিরহাট ২ নম্বর ব্লকের বেলের ধান্যকুড়িয়া হাইস্কুলের দুই ছাত্র নিজামউদ্দিন গাজি ও মহম্মদ সামিম মণ্ডল তৈরি করে ফেলেছে এক বিশেষ স্মার্ট ঘরের মডেল। তা নিয়ে সাড়া পড়ে গিয়েছে স্কুল থেকে এলাকায়।
অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্রের কীর্তিতে হতবাক শিক্ষকেরাও। খুশি পরিবারের লোকজনও। এই ঘর তৈরিতে নিজামউদ্দিন ও সামিম ব্যবহার করেছেন আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স। ঘরের উপর থাকছে বিশেষ সেন্সসর। থাকছে সাইরেন। বৃষ্টি আসলেই সেন্সরের সাহায্য নিয়ে বেজে উঠবে ওই সাইরেন। নিজামউদ্দিন-সামিমরা অবশ্য তাদের এই কাজের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। দু’জনেই জানাচ্ছেন স্কুলের ল্যাবে পড়াশোনা করার পাশাপাশি অতিরিক্ত সময়ে শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়েই তারা এই স্মার্ট ঘর তৈরি করে ফেলেছেন। তবে আপাতত এটা মডেল ঘর। আগামীতে এই ঘরে কীভাবে আরও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে আরও গবেষণা চলবে বলে জানাচ্ছে দুই ছাত্রই। নিজামউদ্দিন বলছে, “বৃষ্টি এলেই এই সেন্সর কাজ করতে শুরু করবে। জামাকাপড় তুলতে আর কোনও চিন্তার কারণ থাকবে না। রাতে অন্ধকার হলেও নিজে থেকে আলো জ্বলে উঠবে। সকালে নিজে থেকেই এই আলো বন্ধ হয়ে যাবে। এটা মডেল ঘর।” তবে এই মডেল ঘর বাস্তবের রূপ দেখলে আখেড়ে আম-আদমির অনেক উপকার হবে বলেই মনে করছে দুই ছাত্র।