উত্তর ২৪ পরগনা: নিজেই নাকি বলেছিলেন কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হোক, আবার যখন গ্রাহকদের ভিড় বাড়তে থাকে, তখন ফের নিজেই চড়াও হন আধার ও রেশন কার্ড সংযুক্তিকরণের কাজে নিযুক্ত যুবকদের ওপর! এমনই অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর কল্যাণগড়ের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে।
নিগৃহীত যুবকদের বয়ান অনুযায়ী, কয়েকজন যুবক সোমবারের কর্মসূচিতে আধার এবং রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণের কাজ করছিলেন। অভিযোগ, তখন ওই রুম থেকে ফ্যান সরিয়ে নেওয়া হয়। গরমে কাজ করতে অসুবিধা হওয়ায় বিষয়টি প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য অনুপ রায়কে জানানো হয়। যুবকদের দাবি তিনি তখন তাঁদের বলেছিলেন, ‘কাজ বন্ধ রাখা হোক।’
এদিকে, কিছু সময়ের মধ্যেই সাধারণ মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। আধার এবং রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ কাজ বন্ধ থাকায়, তখন এলাকার মানুষ অনুপ রায়ের কাছে গিয়ে কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন।
তখন অনুপ রায় দল নিয়ে গিয়ে আধার এবং রেশন কার্ড সংযুক্তকরণের কাজে আসা যুবকদের ওপর চড়াও হন। অভিযোগ, ওই যুবকদের জামার কলার ধরে ধাক্কা দেওয়া হয়। এমনকি এক যুবক ওই সময়ের ভিডিয়ো তুলতে গেলে ফোন পর্যন্ত কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ।
এরপর কাজ বন্ধ রাখেন ওই যুবকরা। অশোকনগর পৌরসভার নবনিযুক্ত মুখ্য পৌর প্রশাসক উৎপল তালুকদারের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানান। এদিকে, অনুপ রায় গোটা ঘটনা অস্বীকার করেছেন। পাল্টা তাঁর দাবি, “দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে যেখানে সাধারণ মানুষের জন্য পরিষেবা দেওয়া হয়, সেখানে ওই সংস্থার যুবকরা কাজে অসহযোগিতা করেছিলেন। আমি কাজকে সচল রাখার জন্য গিয়েছিলাম। বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছিলাম। এর বাইরে কোনও ঘটনা ঘটেনি।”
তিনি বলেন, “ইলেক্ট্রিশিয়ান আমাদের জানিয়েছিলেন, ফ্যান আসলে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই সেটা সরিয়ে অন্য ফ্যান আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। কিন্তু ওরা ওইটুকু ধৈর্য্য ধরেনি। কাজ বন্ধ করে পা গুটিয়ে বসেছিল। আর এদিকে ভিড় বাড়ছিল। সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছিলেন। আমি গিয়ে বলাতে অশান্তি বাধে। ”
যদিও অভিযোগকারীর বক্তব্য, “অনুপবাবু ফ্যানটা নিয়ে যান। গরমে কষ্ট পাচ্ছিলাম। ওঁ বলেছিলেন আধ ঘণ্টা পর ফ্যান দিয়ে যাবো। কিন্তু দিয়ে যাননি। আমরা যাওয়ার পর ওঁ বলেছিলেন, কাজ বন্ধ করে দেও।” ঘটনায় ওই ক্যাম্পে কাজ স্থগিত থাকে। সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। ওই যুবকরা অনুপের ওপর দোষ চাপান, অনুপ তা অস্বীকার করেন। এই বাদানুবাদে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। টানা হিঁচড়েতে এক যুবকের গেঞ্জি ছিঁড়ে যায় বলেও অভিযোগ। তবে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত পৌর প্রশাসক। দুপক্ষরই বক্তব্য তিনি শুনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আরও পড়ুন: ‘পুরো তালিবান ২’, অধিকারী পুত্রের নিশানায় ফের মমতা-সরকার!