উত্তর ২৪ পরগনা: দু’ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় অচল হয়ে রইল হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার বলে অভিযোগ। ওদিকে প্রসূতির অস্ত্রোপচারের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা সারা। সিজার করার আগে ইনজেকশনও দেওয়া হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, এদিকে ওটিতে বিদ্যুৎ নেই। তাই এভাবেই কাটল দীর্ঘ সময়। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক অদ্ভূত অভিজ্ঞতা হল দৌলতপুর এক প্রসূতির। এই ঘটনায় হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। হাবড়া থানার পুলিশ এসে একজনকে আটকও করে। যদিও হাবরা হাসপাতালের সুপার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগর থানার দৌলতপুর এলাকার বাসিন্দা জয়দেব পালের স্ত্রী মাম্পি পাল সন্তানসম্ভবা অবস্থায় চারদিন আগে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার ছিল ডেলিভারির দিন। সেইমতো ডাক্তার জানান, মাম্পি পালের সন্তান হবে সিজার করে। তার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়েও যাওয়া হয় মাম্পিকে।
অ্যানেসথেসিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ইনজেকশনও দেওয়া হয় বলে পরিবারের লোকজনের অভিযোগ। এরপরই ঘটে বিপত্তি। পাল পরিবারের সদস্যরা জানান, কারেন্ট ছিল না। সে কারণে অপারেশন থিয়েটার প্রায় দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকে। কিন্তু অপারেশন না হওয়ায় রোগীর আত্মীয়রা বিপাকে পড়েন। তাঁরা বারবার ডাক্তারের কাছে প্রসূতির পরিস্থিতি জানতে চান। অভিযোগ, সেই সময় হঠাৎই মাম্পি পালকে বারাসত স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়।
অভিযোগ, এরই মধ্যে প্রসূতির শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় ডাক্তারের উপর মেজাজ হারান মাম্পির পরিবারের লোকজন। এমনও অভিযোগ উঠেছে, এক চিকিৎসকের গায়ে হাতও তোলা হয়। মাম্পির শ্বশুর সুদীপ পাল এই ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে যায় হাবরা থানা পুলিশ। সুদীপ পালকে আটকও করে নিয়ে যাওয়া হয় হাবড়া থানায়। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ অ্যানেসথেসিয়ার জন্য ইনজেকশন দিয়ে তাদের মেয়েকে ফেলে রাখা হয়। এতে বড় কোনও বিপদ ঘটলে তার দায় কে নিত? আর দায় নিলেও তাতে কি পরিবারের কোনও উপকার হোত? পরিস্থিতি এতটাই ঘোরাল হয়ে ওঠে বাধ্য হয়ে মাম্পিকে স্থানীয় এক নার্সিংহোমে ভর্তি করাতে হয়।
হাবরা হাসপাতাল সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস জানান, ইলেকট্রিকের কিছু প্রবলেম হয়েছিল। সাময়িক সময়ের জন্য। সেটা ঠিক হয়ে গিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছে। রোগীর পরিবারের অভিযোগও মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি। সাময়িক সমস্যা ঘটেছিল বলে দাবি তাঁর। যা মিটে গিয়েছে।
সুপার বলেন, “সাময়িক সময়ের জন্য বিদ্যুৎ ছিল না সত্যি। আমরা চেষ্টা করেছি যত তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়। হয়েও গিয়েছে। যতক্ষণ না পাওয়ার ব্যাক আপ সম্পর্কে নিশ্চিত হচ্ছি ততক্ষণ তো ওটি শুরু করা যায় না। তার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। আমরা প্রসূতিকে মনিটরিংয়েই রেখেছিলাম। কোনও সমস্যা কিছুই ছিল না। অনেক সময় লেগেছে, এমনও নয়। ওনারা অধৈর্য হচ্ছিলেন। ওনাদের বোঝানোও হয়। অযথা রেফার করা হয়েছে একেবারেই ভুল অভিযোগ।”
আরও পড়ুন: Crime News: ‘যে দোষ করবে সে মার খাবে’, প্রাক্তন প্রেমিককে গুলি করে সদর্পে বলল নাবালিকা প্রেমিকা