AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

বছর ঘুরতে হাতে এল রিপোর্ট, মৃত শুভ্রজিৎ কোভিড নেগেটিভ! ডুকরে কেঁদে উঠলেন বাবা-মা

Corona Report: ২০২০ সালে ১০ জুলাই। ইছাপুরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শুভ্রজিৎ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিল। কিন্তু ভর্তি হতে পারেনি সে। ১১ ঘণ্টা একের পর এক হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসা করাতে ঘুরে বেড়ান শুভ্রজিতের বাবা-মা।

বছর ঘুরতে হাতে এল রিপোর্ট, মৃত শুভ্রজিৎ কোভিড নেগেটিভ! ডুকরে কেঁদে উঠলেন বাবা-মা
সেদিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ছেলেহারা বাবা-মা
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2021 | 9:27 AM
Share

উত্তর ২৪ পরগনা: ছেলের ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে উকিল হবে। বছর আঠারোর সেই টগবগে ছেলেটি কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা যায় বলে অভিযোগ ওঠে। যে কোভিড রিপোর্টের জন্য কার্যত বিনা চিকিৎসায় অসময়ে দুনিয়া ছাড়তে হয়েছিল ইছাপুরের শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে, আজ এক বছর পর তার রিপোর্ট হাত পেয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলেন বাবা-মা। ছেলের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে যে!

২০২০ সালের ১০ জুলাই। ইছাপুরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শুভ্রজিৎ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিল। কিন্তু ভর্তি হতে পারেনি সে। ১১ ঘণ্টা একের পর এক হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসা করাতে ঘুরে বেড়ান শুভ্রজিতের বাবা-মা। কিন্তু কোথাও চিকিৎসা না পেয়ে অবশেষে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছন। সেখানেও একই ছবি। প্রথমে ভর্তি নিতে চায়নি হাসপাতাল বলে অভিযোগ ওঠে। শেষে শ্রাবণী দেবী হাসপাতালের ভিতর ঢুকে আত্মহত্যার হুমকি দিলে ছেলেকে ভর্তি নেওয়া হয়।

যদিও সেদিন রাতেই মৃত্যু হয় শুভ্রজিতের। পরিবারের অভিযোগ, কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তাঁদের ছেলের। এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে আলোড়ন শুরু হয়। বছর ঘুরেছে। অবশেষে সোমবার ছেলের করোনা রিপোর্ট হাতে পেলেন ছেলে হারা বাবা-মা। তা দেখে আবার হাহাকার বাবা-মায়ের। ছেলে কোভিড নেগেটিভ ছিল, রিপোর্ট দেখামাত্র আফশোস আর মানসিক যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন শুভ্রজিতের মা-বাবা।

২০২০ সালের ১০ জুলাই দিনটাকে কীভাবে ভুলবেন বিশ্বজিৎবাবু ও শ্রাবণী দেবী! সেদিন অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে প্রথম কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালে যান বাবা-মা। কিন্তু সেখানে কোভিড চিকিৎসা পরিকাঠামো না থাকায় তাঁদের ফিরে দেওয়া হয়। বেলঘড়িয়ায় মিডল্যান্ড নার্সিং হোমে স্থানান্তর করা হয়। অগত্যা পড়িমরি করে ছোটেন তাঁরা। কিন্তু সেখানেও দাঁড় করিয়ে রাখা হয় তাঁদের। নিরুপায় হয়ে শুভ্রজিতের মা এবং বাবা বেলঘড়িয়া থানায় ফোন করেন। তারপর রক্তের স্যাম্পল টেস্ট করে হাসপাতাল থেকে বলা হয় শুভ্রজিতের কোভিড পজেটিভ। এই কারণে সেখানেও তাকে ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেয় হাসপাতাল।

আবার শুভ্রজিতের মা-বাবা ছুটে যান ইএসআই হাসপাতেলে। তার পর সেখান থেকে সাগরদত্ত হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সাগরদত্ত হাসপাতালও বেড নেই বলে ফিরিয়ে দেয়। একের পর এক হাসপাতাল ছুটতে ছুটতে অসহায় বাবা-মা ছেলেকে নিয়ে যান কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও জানানো হয় বেড নেই! হাসপাতালের দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর ছেলের অবস্থা সহ্য না করে মা আত্মহত্যার হুমকি দিলে নড়েচড়ে বসে মেডিকেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেদিন বিকেল চারটে নাগাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শুভ্রজিতকে চিকিৎসার জন্য ভরতি নেয়। কিন্তু এতো করেও ছেলেকে ফেরাতে পারেননি বাবা-মা। সেদিনই রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে মারা যায় সে।

ছেলের এভাবে মৃত্যু মানতে পারেননি বাবা-মা। কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় শুভ্রজিতের পরিবার। আদালত রায় দেয় মৃত শুভ্রজিতের ভিসেরা টেস্ট, RTPCR টেস্ট এবং পোস্টমর্টেম করতে হবে। সেই মোতাবেক এতগুলো পরীক্ষা হয়। সেই RTPCR রিপোর্ট সোমবার বেলঘড়িয়া থানা থেকে শুভ্রজিতের বাড়িতে পৌঁছয়। মৃত ছেলের নেগেটিভ করোনা রিপোর্ট পেয়ে আবার ডুকরে কেঁদে উঠলেন বিশ্বজিৎবাবু ও শ্রাবণী দেবী। আরও পড়ুন: ‘বিশ্বভারতী ভাল চলছে, তাই তৃণমূলের কষ্ট হচ্ছে,’ অনুব্রতকে নিশানা দিলীপের