উত্তর ২৪ পরগনা: শ্যামনগরের রাহুতা বিআরএস কলোনির বাসিন্দা শোভারানি মণ্ডলের মৃত্যুর ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই (CBI)। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক ধৃতদের তিনদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় (Post Poll Violence) ধৃতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল বিধানসভার বিজেপি বুথ সভাপতি কমল মণ্ডলের মা শোভারানি মণ্ডলকে খুনের অভিযোগে তিন মহিলা-সহ মোট আট জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সূত্রের খবর, এই আটজনকে মঙ্গলবার সিবিআইয়ের তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। সেই নোটিসে বলা হয়েছিল, আটজনই যেন বুধবার সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে হাজির হন।
সেই মতো তাঁরা সিবিআই দফতরে যান। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু বয়ানে অসঙ্গতি থাকার কারণে তাঁদের গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ধৃতরা হলেন বিশ্বনাথ ঘোষ, সঞ্জয় মিস্ত্রী, বাসুদেব ঘোষ, দেবাশিস ঘোষ, মনিকা মজুমদার, রুমা সিংহ, রুপালি হালদার, শম্ভু চক্রবর্তী। ধৃতদের মধ্যে বিশ্বনাথ ঘোষ ভাটপাড়া পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর এবং সঞ্জয় মিস্ত্রী ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর।
কিছুদিন আগে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে নিহত শোভারানি মণ্ডলের বাড়িতে যায় সিবিআই। প্রায় তিন ঘণ্টা রাহুতা বিআরএস কলোনিতে ছিলেন তদন্তকারীরা। ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ আরও একবার খতিয়ে দেখেন তাঁরা। পাশাপাশি মণ্ডল পরিবারের যাঁরা সিবিআই অফিসে যেতে পারেননি, তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ইতিমধ্যেই ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় একাধিক চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। বীরভূমের বাসিন্দা মনোজ জয়সওয়ালের মৃত্যু মামলায় প্রথম চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। গত ১৪ মে মনোজকে খুনের অভিযোগ ওঠে। এলাকায় তিনি বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত বলেই পুলিশের কাছে দাবি করা হয়। ২ সেপ্টেম্বর এই চার্জশিট জমা পড়ে।
৩ সেপ্টেম্বর বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদব খুনে ব্যারাকপুর আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। চার্জশিটে নাম রয়েছে টুনটুন চৌধুরী নামে একজনের। এ ছাড়াও আরও তিনজনের নাম রয়েছে সেখানে। তদন্ত ভার গ্রহণের দু’ সপ্তাহের মধ্যেই দু’টি চার্জশিট জমা দেয় গোয়েন্দারা।
১০ সেপ্টেম্বর জমা পড়ে তৃতীয় চার্জশিট। বীরভূমের কাঁকড়তলার বিজেপি কর্মী মিঠুন বাগদি খুনে চার্জশিট জমা পড়ে এদিন। এই খুনের ঘটনায় আগেই পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের মধ্যে তিনজন জেল হেফাজতে থাকলেও বাকি দু’জনের জামিন হয়েছে। গত ১২ জুন বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের কাঁকড়তলা থানার অন্তর্গত নবসন গ্রামে বিজেপির বুথ সহ–সভাপতি মিঠুন বাগদি খুন হন। সেই ঘটনার তদন্তে পুলিশ ইতিমধ্যেই পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।
একই সঙ্গে নদিয়ার কোতোয়ালি থানা এলাকার বিজেপি কর্মী পলাশ মণ্ডলকেও খুনের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, গত ১৪ জুন পলাশ মণ্ডলকে বাড়িতে গুলি করে, বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা। গত ২৫ অগস্ট এই ঘটনায় মামলা রুজু করে সিবিআই। ১০ সেপ্টেম্বর চার্জশিট জমা পড়ে আদালতে। পাঁচজনের নামে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়।
পঞ্চম চার্জশিটটি জমা পড়ে নন্দীগ্রামে দেবব্রত মাইতি হত্যাকাণ্ডে। বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি হত্যাকাণ্ডে শেখ ফতেনুর, শেখ মিজানুর ও শেখ ইমদুলাল ইসলামর নামে হলদিয়া আদালতে চার্জশিট জমা দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নন্দীগ্রামের চিল্লোগ্রামের বাসিন্দা তথা বিজেপি সমর্থক দেবব্রত মাইতিকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: Fire: আবাসিক ভবনে ভয়াবহ আগুন! মৃত্যু ৪৬ জনের, বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা