উত্তর ২৪ পরগনা: ফের ভুয়ো আইপিএস ( Fake IPS) অফিসার গ্রেফতার হল বেলঘরিয়ায়। আইপিএস অফিসার বলে নিজেকে দাবি করে ব্যবসায়ীদের ধমকে চমকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা তুলতেন এক যুবক বলে অভিযোগ। অবশেষে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে দত্তপুকুর হাটখোলা থেকে রাজু দেবনাথ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।
প্রতারিত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, রাজু দেবনাথ নামে ওই ব্যক্তি তাঁদের কাছে আইপিএস অফিসার হিসাবে পরিচয় দিত। কিন্তু পরে জানা যায়, তাঁর এি পরিচয় ভুয়ো। ভুয়ো আইপিএস অফিসারের কথা জানতে পেরে এর পর বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজু দেবনাথকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেলঘরিয়া থানার পুলিশ রবিবার গভীর রাতের গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দত্তপুকুর হাটখোলা এলাকায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে রাজুকে গ্রেফতার করা হয়। রাজু দেবনাথের কাছ থেকে আইপিএস অফিসারের নকল পোশাক উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার থেকে দশ দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে ব্যারাকপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।
পাশাপাশি ওই যুবকের সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। উল্লেখ্য, সেই কসবা ভ্যাকসিন কাণ্ড থেকে শুরু। সেই ভুয়ো আইএএস অফিসার কসবার দেবাঞ্জন দেব দিয়ে শুরু হয়। তার পর রাজ্যে যেন ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হওয়ার পরিস্থিতি। বরানগরের সনাতন রায় চৌধুরী, বেলঘরিয়ার রাজর্ষি ভট্টাচার্য – ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো সিবিআই কৌঁসুলী, ভুয়ো আইপিএস, ভুয়ো বিচারক, ভুয়ো সেনা- ‘ঠগ’দের এই তালিকায় এখন নবতম সংযোজন হচ্ছে প্রায় রোজদিন। এবার তাতে নয়া সংযোজন হল দত্তপুকুরের রাজু দেবনাথ।
পুলিশ দেখতে চাইছে ঠগদের হাত কতদূর লম্বা। ভুয়ো অফিসারদের তদন্তে নেমে এমন একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে। শহর থেকে জেলা- এখন সর্বত্রই নানা ক্ষেত্র থেকে ‘ভুয়ো’দের জালে ফেলছেন তদন্তকারীরা। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে এই বেলঘরিয়ায় গ্রেফতার হয় রাজর্ষি ভট্টাচার্য নামে এক ভুয়ো আইপিএস।
তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে উঠে আসে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। রাজর্ষিকে জেরা করে কলকাতা পুলিশের গুণ্ডা দমন শাখা জানতে পারে, বিগত কয়েক মাস ধরে নানা স্তরের পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল রাজর্ষি। যেহেতু নিজেকে আসল পুলিশ প্রতিপন্ন করতে গেলে বাস্তব জীবনে যাঁরা পুলিশ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা জরুরি, সেই কারণেই এই যোগাযোগ বাড়িয়ে তোলে রাজর্ষি। জানা যায়, এই প্রক্রিয়ায় তাঁর যোগাযোগ হয় পার্ক স্ট্রিট থানার এক এএসআই-এর সঙ্গে। তাঁকেও সে নিজের পরিকল্পনায় শামিল করে। ওই পুলিশ আধিকারিককে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হয়েছে।
তবে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর যে তথ্য তদন্তে উঠে এসেছিল এই কাণ্ডে। সেটা হল এক ব্যক্তিকে খুনের পরিকল্পনাও করেছিল রাজর্ষি! এখন রাজুকে জেরা করে কী তথ্য উঠে আসে সেটাই দেখবার।
আরও পড়ুন: CBI Summons Madan Mitra: চিট ফান্ড মামলায় তলব, সিবিআই দফতরে মদন মিত্র