বসিরহাট: বসিরহাটে তৃণমূলের জয় অবসম্ভাবীই ছিল, দাবি সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের। শুক্রবার বসিরহাট আদালতে জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর বেরিয়ে এসে এমনই বললেন শাহজাহান। শাহজাহানের কথায়, “চক্রান্ত ব্যর্থ। আরে রেখা পাত্র তো হারবে সবাই জানে। ও হারবে এতে অজানা কিছু নেই।”
গত জানুয়ারি থেকে বারবার সন্দেশখালি শিরোনামে। তবে সবথেকে বড় চমক বোধহয় এখানে বিজেপিই দিয়েছিল রেখা পাত্রকে প্রার্থী ঘোষণা করে। বসিরহাট লোকসভায় তৃণমূলের হাজি নুরুলের বিরুদ্ধে বিজেপি রেখা পাত্রকে প্রার্থী করে। যে রেখার গোপন জবাববন্দিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন শাহজাহানের ছায়াসঙ্গী শিবু হাজরা, উত্তম সর্দাররা। যে গ্রেফতারির পর সন্দেশখালির ঘটনাক্রম নতুন খাতে বইতে শুরু করে।
ভোটপর্বে প্রধানমন্ত্রী থেকে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব, বাংলাজুড়ে প্রচারে হাতিয়ার করেছিলেন এই সন্দেশখালিকেই। ভোট ঘোষণার পরও সন্দেশখালিতে ঘটনাক্রম কম দেখা যায়নি। তবে ৪ জুন ভোটের ফলে সে অর্থে সন্দেশখালি কোনও প্রভাবই ফেলেনি। বসিরহাটে তৃণমূলই জয়ী হয়। হাজি নুরুল ইসলাম জেতেন ৮০৩৭৬২ ভোট পেয়ে। রেখা পাত্র পান ৪৭০২১৫টি ভোট। যদিও শাহজাহান বিরোধী আন্দোলনের ‘এপিসেন্টার’ সন্দেশখালিতে জেতেন রেখাই। সন্দেশখালি বিধানসভা এলাকায় বিজেপিই লিড পায়।
বসিরহাটের ফলাফল নিয়ে শুক্রবার বসিরহাট আদালত চত্বরে শেখ শাহজাহানকে প্রশ্ন করা হলে, বুঝিয়ে দেন, রেখার হার নিয়ে তিনি তো আত্মবিশ্বাসী ছিলেনই। সকলেই জানতেন রেখার জেতার কোনও সম্ভাবনাই নেই। রেখার হারে এদিন শাহজাহান অন্য মেজাজে, স্বরক্ষেপণই তা বুঝিয়ে দিয়েছে।
বসিরহাটে তৃণমূলের জয়ের পর এদিন আদালত চত্বরেও অন্য ছবি দেখা যায়। শাহজাহানকে আদালতে তোলা হয়। তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি ঘিরে উৎসাহী সমর্থকদের বিপুল জমায়েত ছিল কোর্টচত্বরে।
শাহজাহান আদালত চত্বরে পৌঁছতেই জয় বাংলা স্লোগান দিতে থাকেন তাঁর অনুগামীরা। এদিন ন্যাজাট থানার ৯ নম্বর মামলার প্রেক্ষিতে শাহজাহানের জামিনের আবেদন করা হয়। ভিড় ঠেলে আদালত চত্বরে ঢোকে সিবিআইয়ের গাড়ি। শাহজাহান অনুগামীদের ভিড় দেখে তৎপর ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীও।
কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা বারবার আবেদন করলেও কোর্ট লক আপের বাইরে এদিন ভিড় ছিল। একটা সময় করিডরে জমায়েত দেখে আদালতের এক কর্মী সকলকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বাহিনীকে। জামিনের আবেদন আদালত খারিজ করে দিলেও শাহজাহান কিন্তু একেবারে ফুরফুরে মেজাজেই এদিন ধরা দেন।