সন্দেশখালি: অজিত মাইতি গ্রেফতার হয়েছেন। দায়িত্ব বর্তেছে অন্যের কাঁধে। কিন্তু সন্দেশখালির আগুন নেভেনি। সোমবার সকাল থেকে আবারও তপ্ত সন্দেশখালি। আবারও লাঠি, বাঁশ হাতে রাস্তায় নামলেন বেড়মজুরের বাসিন্দারা। এবার নিগৃহীত, নির্যাতিত গ্রামের মহিলাদের কাঠগড়ায় শঙ্কর সর্দার। আরও এবার প্রকাশ্যে এল গ্রামের মহিলাদের ওপর শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ। অভিযোগ উঠছে, স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলা মেটাতেও যেতে হত শেখ সিরাজউদ্দিনের কাছে। আর সেখানেও চলত শারীরিক নিগ্রহ। TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন সন্দেশখালির এক নির্যাতিতা।
ওই নির্যাতিতার বক্তব্য, “৬-৭ মাস হয়ে গিয়েছে। আমাদের স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলা হচ্ছিল। লোক আমাদের সিরাজের ওখানে নিয়ে গিয়েছে। অজিত মাইতি ছিল। ওখানে কোষাধ্যক্ষ ছিল, আরও অনেক মহিলা ছিল। ওত লোকের সামনে আমাকে উলঙ্গ করে ছেড়ে দিল…ওই সময়ে আমি একলা হয়ে গিয়েছিলাম। আমি ভয়ে তখন কিছুই জানাতে পারিনি। তখন আমার পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনও মা বোন ছিল না।”
ওই মহিলা আরও বলেন, “সেদিন আমার পাশে শুধু এক দিদি ছিল, আর তার কোলে বাচ্চা ছিল। সেই বাচ্চাকেও মেরেছিল সে সময়ে। সে সময়ে আমার খুড়তুতো কাকা-কাকিমাও আমার চুলের মুঠি ধরে মেরেছিল। আমি সিরাজকে জানাতে গিয়েছিলাম। বিশাল ইয়ে… করেছে আমাকে। আমার মুখ দেখানোর মতো নয়।”
সাত মাস পর, পরিস্থিতি বদলেছে। এখন বেড়মজুরের মহিলারা লাঠি-ঝাঁটা হাতে রাস্তায় নেমেছেন। তাই ওই নিগৃহীতাও সাহস করে মুখ খুলেছেন ক্যামেরার সামনে। সেই মহিলা এবার পঞ্চায়েত সদস্য শঙ্কর সর্দারের বিরুদ্ধেও মুখ খুলছেন। দায়ের করবেন অভিযোগ।
ওই নিগৃহীতার বয়ান অনুযায়ী, শঙ্কর সর্দার সম্পর্কে তাঁর দাদা হন। তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হওয়ায় পাড়ার ‘দাদা’রা তাঁকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শেখ সিরাজউদ্দিনের কাছে। তিনি সমস্ত অভিযোগ শোনেন। তারপর ওই মহিলাকে তিনি পাঠিয়ে দেন পঞ্চায়েত সদস্য শঙ্কর সর্দারের কাছে। কিন্তু মহিলার অভিযোগ, বিবাদ মিটিয়ে দেওয়ার নামে তাঁকে শ্লীলতাহানি করা হয়।
সোমবার সকালে সেই শঙ্কর সর্দারের পরিবারের ওপরেই ক্ষোভ আছড়ে পড়ল গ্রামের এক গুচ্ছ নিগৃহীতাদের। বাড়িতে চলে বেপরোয়া ভাঙচুর, খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভয়ে ত্র্যস্ত হয়ে রয়েছেন শঙ্কর সর্দারের পরিবারের সদস্যরা। নিগৃহীতদের বক্তব্য, “যখন আমাদের ওপর অত্যাচার চলেছিল, তখন কী ওরা বুঝতে পেরেছিল, আমাদের কী সহ্য করতে হয়, তাহলে আমরা কীভাবে বুঝব?” শঙ্কর সর্দারের স্ত্রীর অবশ্য বক্তব্য, তাঁর স্বামী নির্দোষ।