ভাঙড়: তেঁতেছে সন্দেশখালি। পথে নেমেছে মহিলারা। কারোর হাতে লাঠি। কারোর হাতে ঝাঁটা। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। এই আবহের মধ্যেই মহিলাদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। তাঁর দাবি, কলকাতা থেকে টাকার বিনিময়ে লোক ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সন্দেশখালিতে। তাঁরা প্রথমে ঘোমটা দিয়ে কথা বললেও পরে নাকি সিগারেট খাচ্ছেন। আর শওকতেই এই মন্তব্যের পরই উঠছে সমালোচনার ঝড়। যেখানে সন্দেশখালিতে মহিলারা শারীরিক নিগ্রহ, শ্লীলতাহানি, জমি দখল, লুট সহ ভূরি-ভূরি অভিযোগ করে পথে নামছেন। সেই সময় তাঁদের উদ্দেশ্যেই এই ধরনের মন্তব্য করায় বিরোধীদের তোপের মুখে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক।
ভাঙড়ের শানপুকুর অঞ্চলে তৃণমূলের একটি সভা ছিল। সেই সভা থেকে শওকত বললেন, “সন্দেশখালি নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হচ্ছে তার ৯০ শতাংশ মিথ্যা। এটা আমি শপথ করে বলতে পারি।” তৃণমূল নেতার আরও দাবি, কলকাতা থেকে নাকি লোক ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সন্দেশখালিতে। তিনি বলেন,”পাঁচ হাজার, দশ হাজার, কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করা হচ্ছে।” এরপরও থেমে থাকেননি বিধায়ক। আরও বললেন, “এদের কেউ ঘোমটা দিয়ে কথা বলছেন। পরবর্তীকালে দেখা যাচ্ছে এরাই সিগারেট খাচ্ছে।” এর পিছনে সিপিএম ও বিজেপি-র হাত রয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর কথায়, “এত দিন ওই এলাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। কেউ ফোনে একটাও ছবি তোলেনি? আসলে সিপিএম ও বিজেপি উস্কানি দিচ্ছেন।” বস্তুত, এর আগে সন্দেশখালির মহিলাদের ‘বহিরাগত’ বলে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তা নিয়েও যথেষ্ঠ কাঠখড় পোহাতে হয়েছিল তৃণমূল নেতাদের। মহিলারা রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও সুজিত বসুকে প্রশ্ন করেছিলেন, কেন দিদি তাঁদের বহিরাগত বলেছেন। এই রেশের মধ্যেই ফের বেফাঁস মন্তব্য় করে দলকে অস্বস্তিতে ফেললেন শওকত।
বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সর্দার বলেন, “এই মন্তব্যের উত্তর দিতে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। উনি একজন দুষ্কৃতী। ২০২১ নির্বাচনের পর ওনার নেতৃত্বাধীন দুষ্কৃতী বাহিনী ভাঙড়ে অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে। বিজেপি কর্মীদের ভাঙচুর করেছে। এখন এই সব মন্তব্য করে আন্দোলনের মোড় ঘোরাতে চাইছেন। ওনার বক্তব্যে আমরা লজ্জিত। আমরা চাই শওকতের বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআই তদন্ত করে।” অপরদিকে, আইএসএফ জেলা পরিষদ সদস্য বলেন,”আজ তৃণমূল নেতারা জেলে যাচ্ছেন। কালকে তো ছাড়া পাবেন। তখন কী হবে? প্রাণের ভয়েই মহিলারা ঘোমাটা দিচ্ছেন। আর সিগারেট খাওয়া একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।”