Sheikh Shajahan: খেলা শেষ! অবশেষে গ্রেফতার শেখ শাহজাহান

Aritra Ghosh | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Feb 29, 2024 | 9:31 AM

Sheikh Shajahan Arrest: একটাই নাম, শেখ শাহজাহান। আর তাঁকে ঘিরে সন্দেশখালি। গত দেড়টা মাস ধরে রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সন্দেশখালি। সরবেড়িয়া গ্রাম যে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল, তা ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় রাজনীতিতেও। নাড়িয়ে দেয় জাতীয় SC ST কমিশন, জাতীয় মহিলা কমিশনকেও

Sheikh Shajahan: খেলা শেষ! অবশেষে গ্রেফতার শেখ শাহজাহান
শেখ শাহজাহান
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

সন্দেশখালি: গ্রেফতার শেখ শাহজাহান। ৫৫ দিন পার। মিনাখাঁর বামনপুকুর বাজার এলাকায় খ্রিস্টান পাড়া থেকে গ্রেফতার, পুলিশ সূত্র। । আজই পেশ করা হবে বসিরহাট আদালতে। রাজ্য পুলিশের ডিজি-র সন্দেশখালিতে রাত্রিযাপনের পরই কোথাও একটা জল্পনা চলছিল, এবার হয়তো শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হবেন। কিন্তু শাহজাহানের গ্রেফতারিতে কোথাও একটা আইনি জটিলতা থেকেই যাচ্ছিল। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছিলেন, পুলিশ ও শাসকদলের ছত্রছায়াতেই রয়েছেন শাহজাহান। গত রবিবার প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “কোথাও কোনও সংশয় রাখবেন না, যে শাহজাহানকে আড়াল করা হচ্ছ। শাহজাহানকে যদি কেউ আড়াল করে, তাহলে সেটা জুডিশিয়ারি ডিপার্টমেন্ট।”  এরপর তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, আগামী সাত দিনের মধ্যেই গ্রেফতার হবেন তৃণমূল নেতা শাহজাহান। দলের সাত দিনের ডেটলাইনের ৩দিনের মাথায় গ্রেফতার হলেন তিনি।

একটাই নাম, শেখ শাহজাহান। আর তাঁকে ঘিরে সন্দেশখালি। গত দেড়টা মাস ধরে রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সন্দেশখালি। সরবেড়িয়া গ্রাম যে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল, তা ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় রাজনীতিতেও। নাড়িয়ে দেয় জাতীয় SC ST কমিশন, জাতীয় মহিলা কমিশনকেও। রেশন দুর্নীতিতে বালু ঘনিষ্ঠ শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেদিন বাংলা এক বেনজির ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল। অভিযোগ ওঠে. শেখ শাহজাহানের বাড়ির দরজার তালা ভাঙার চেষ্টা করতেই হাজার হাজার মহিলা পুরুষ  ইডি-র দিকে তেড়ে এসেছিলেন লাঠি, বাঁশ, লোহার রড হাতে। তাঁদের কাছে শেখ শাহজাহান ভগবান, তিনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতেই পারেন না। সেদিন ইডি আধিকারিকদের মার খেতে হয়েছিল। সিআরপিএফ জওয়ানদের কলাবাগান থেকে দৌড়ে পালাতে হয়েছিল। মাথা ফেটেছিল ২ ইডি আধিকারিকের। তখন থেকেই শেখ শাহাজাহান বেপাত্তা।

এরপর বেশ কিছুদিন ধরে কেবল সেখানকার মানুষ, যাঁরা সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছেন, তাঁরা কেবল মুখ খুলেছেন শাহজাহানের পক্ষেই। এরপর আস্তে আস্তে মোড় ঘুরতে শুরু করে। উঠে আসতে থাকে একের পর এক অভিযোগ। গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, জমি দখলের। প্রথম প্রথম অভিযোগ করছিলেন, তেভাগা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা আন্দোলনকারীদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের জমি দখলেরও অভিযোগ ওঠে। এরপর গ্রামের মহিলারা সংগঠিত হন। ধীরে ধীরে উঠে আসে শিবু হাজরা, উত্তম সর্দাররা।  শিবু-উত্তমদের বিরুদ্ধে উঠে আসতে থাকে নারী নির্যাতনের অভিযোগও ওঠে। লাঠি-বাঁশ হাতে রাস্তায় নামে গ্রামের আদিবাসী মহিলারা। সে বিক্ষোভ থেকে উঠে আসতে থাকে নারী নির্যাতনের একের পর এক ভয়ঙ্কর অভিযোগ। দলীয় কার্যালয়ে রাতে ডেকে নিগ্রহেরও অভিযোগ ওঠে। এরপর গ্রাম জ্বলতে থাকে। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা আগুন ধরিয়ে দেন শিবু-উত্তমের বাগানবাড়ি, মাছের ভেড়িতে।  সর্বপ্রথম গ্রেফতার হন উত্তম সর্দার। তখনও শিবু অধরা। গ্রামে তখনও জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন। এরই মধ্যে খবর করতে গিয়ে আক্রান্ত হন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। জারি হয় ১৪৪ ধারা।  গ্রামে পৌঁছয় জাতীয় মহিলা কমিশন, রাজ্য মহিলা কমিশন, জাতীয় SC-ST কমিশন।  যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও। নির্যাতিতাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

এরপর এক রাতে শিবু সর্দারের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের ধারা যুক্ত হয়। রাতারাতি গ্রেফতার হয় শিবু। কিন্তু তখনও ধিক ধিক করে জ্বলছিল বিক্ষোভের আগুন। শিবু, উত্তমের মতো চুনোপুঁটিদের গ্রেফতারে সন্তুষ্ট নন সন্দেশখালির বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, গ্রেফতার করতে হবে শেখ শাহজাহানকে।

রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়ে দেন, কেবল শাহজাহান নয়, সন্দেশখালিতে যারাই আইন ভেঙে সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু ডিজি-র কথায় আশ্বস্ত হতে পারছেন না সন্দেশখালিবাসী। তাঁদের বক্তব্য, শাহজাহান জেলে গেলে তবেই তাঁরা বুঝবেন শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকেই ফের বেনজির অ্যাকশন মোডে ছিলেন ডিজি। এডিজি সাউথ বেঙ্গল, বসিরহাট থানার এসপিকে সঙ্গে নিয়ে অ্যাকশনে ছিলেন রাজীব কুমার। যাঁরা আইন ভেঙেছেন তাঁদের কোনওভাবেই রেয়াত নয়, গ্রামে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে দেন ডিজি। সকালে সন্দেশখালিতে পৌঁছে যান এডিজি সাউথ বেঙ্গল সুপ্রতিম সরকার। সন্দেশখালিতে ডিজির রাত্রিযাপনের পরই বিশেষ দিন। শান্তিতে সন্দেশখালি।

Next Article