Sandeshkhali: জেলিয়াখালির ‘খেটে খাওয়া’ ছেলে শরিফুলের বাড়িতে ভাতও জোটে না, সেই কিনা ২০০ কোটির কারবারের চাঁই! কে শরিফুল জানেন?

সিজার মণ্ডল | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Apr 03, 2024 | 3:10 PM

Sandeshkhali: ২০২২ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর জেলিয়াখালির শরিফুলের বাড়িতে পৌঁছেছিল TV9 বাংলা। বিদ্যাধরী নদী পেরিয়ে প্রথমে হাঁটা, তারপর বাইক, ফের হাঁটা। জেলিয়াখালির শেষ প্রান্তে শরিফুলের বাড়ি। এক তলা ঝুপড়ি মতো একটা ঘর।

Sandeshkhali: জেলিয়াখালির খেটে খাওয়া ছেলে শরিফুলের বাড়িতে ভাতও জোটে না, সেই কিনা ২০০ কোটির কারবারের চাঁই! কে শরিফুল জানেন?
শরিফুল মোল্লা আদতে কে?
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

কলকাতা: সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের সঙ্গে সমান্তরালভাবে উঠে আসছে আরেকটি নাম শেখ শরিফুল। মাদক মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেও। ২০২২ সালের একটি অভিযোগ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে উত্তর ২৪ পরগনায় ড্রাগ পাচারের অভিযোগ করেছিলেন। সেখানেই উঠে এসেছিল সন্দেশখালির দুই দাপুটে নেতা শেখ শাহজাহান ও শিবু হাজরার নাম। বলা হয়েছিল, প্রায় ৪০ কেজি হেরোইন শরিফুল এন্টারপ্রাইজের নামে কলকাতা বন্দরে এসেছিল। তখনই শরিফুল নামটি প্রকাশ্যে আসে। হেরোইন চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে জেলিয়াখালির তৃণমূল নেতা শরিফুল মোল্লার বিরুদ্ধে। দেড় বছর আগেই হেরোইন মামলার তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। সে সময়ে শরিফুলের বাড়িতে অন্তর্তদন্ত করেছিল TV9 বাংলা। পুলিশ সে সময়ে তদন্ত করে ৬ টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করলেও, পরে সবই ধামাচাপা পড়ে যায় বলে অভিযোগ। সন্দেশখালি আবার শরিফুলকে কার্যত ‘রি-ওপেন’  করেছে।

কে এই শরিফুল মোল্লা?

২০২২ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর জেলিয়াখালির শরিফুলের বাড়িতে পৌঁছেছিল TV9 বাংলা। বিদ্যাধরী নদী পেরিয়ে প্রথমে হাঁটা, তারপর বাইক, ফের হাঁটা। জেলিয়াখালির শেষ প্রান্তে শরিফুলের বাড়ি। এক তলা ঝুপড়ি মতো একটা ঘর। একেবারে দুঃস্থ পরিবারের সদস্যদের ঘর যেমনটা হয় আরকী! এলাকায় খেটে খাওয়া ছেলে হিসাবেই পরিচিত শরিফুল। কিন্তু এই শরিফুলের বিরুদ্ধেই একটা সময়ে যৌথ অভিযান চালিয়েছিল গুজরাট এটিএস ও ডিরেক্টরেট অব্ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স। ওই বছর ৯ সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ারিং যন্ত্রাংশের সরঞ্জামের মধ্যে থেকে প্রায় ৪০ কেজি হেরোইন উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। এই বিপুল পরিমাণ মাদকের দাম ছিল প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

তখন এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে উঠে আসে, জেলিয়াখালির প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে শরিফুল ইসলাম মোল্লার নাম। যখন TV9 বাংলার প্রতিনিধি শরিফুলের বাড়িতে গিয়েছিলেন, তখন স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর ছবি দেখে একবাক্যে স্বীকার করেছেন, ‘হ্যাঁ এই শরিফুল…’ কিন্তু স্থানীয় এক মহিলা বলেন, ‘শরিফুল এখন খুব কমই গ্রামে থাকে। কলকাতাতেই থাকে বেশিরভাগ সময়।’ শরিফুলের স্ত্রী সন্তানও রয়েছে। স্ত্রী অবশ্য তাঁর বাপেরবাড়িতেই থাকেন বেশিরভাগ সময়ে। অর্থাৎ জেলিয়াখালিতেই। বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারাই।

শরিফুলের গ্রামে হানা দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। অভিযোগ ওঠে, কলকাতায় যে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার হয়েছিল, তা আনিয়েছিলেন এই শরিফুলই। কিন্তু গ্রামবাসীরাই বলছেন, ইদানীংকালেও শরিফুলের জীবনযাত্রায় বড় কোনও পরিবর্তন হয়নি। এমনকি বাড়িতে রোজ ঠিক মতো খাবারও জুটত না। কোনওমতে আলুভাতে ভাত খেয়ে দিন চলত। তবে জেলিয়াখালিতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল অন্য আরেকটি বিষয়ও। ক্যামেরার সামনে মুখ না খুললেও অনেকে বলছিলেন, ইদানীংকালে শরিফুলের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছিল। দামী জিনিসপত্র ব্যবহার করা শুরু করেছিলেন শরিফুল। লম্বা সময় ধরে গ্রামেও থাকছিলেন না। গ্রামে তাঁর ঘর তালাবন্ধ। সে সময়ে নাম উঠে এসেছিল সন্দেশখালির ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি শেখ শাহজাহান ও সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি শিবু হাজরার নামও। শিবু হাজরা দাবি করেন, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। কোনওভাবে সুকান্ত মজুমদার প্রমাণ করতে পারলে আমি আত্মসমর্পণ করব।’

এখন সেই শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরারা জেলে। শেখ শাহজাহানকে বুধবার জোকা ইএসআই হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে এই শরিফুলকে নিয়েই প্রশ্ন করা হলে, তিনিও বলে দেন, ‘সবই মিথ্যা।’ শরিফুল কি তাহলে কেবল একজন সামান্য বোরে, চাঁই তবে কে? এটাই খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

Next Article