Sandeshkhali: ‘আমার ছেলেটা পরীক্ষা দিয়ে ফিরছিল, স্যর তুলে নিয়ে গেল’ পুলিশের ভ্যানের চাকার সামনে আকুলিবিকুলি মা, DG ফিরতেই সন্দেশখালিতে অন্য বীভৎসতা

Sourav Dutta | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Feb 23, 2024 | 3:43 PM

Sandeshkhali: অভিযোগ, গ্রামের সেই মহিলার সন্তানকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তিনি হলেন, "আমার ছেলে পড়াশোনা করে। ভ্যান চালিয়ে পড়াশোনা করে, ওকে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ।" পুলিশের সামনে আকুলিবিকুলি কান্না গ্রামের মহিলার। এককথায়, সন্দেশখালি যেন ফেরাল নন্দীগ্রামের স্মৃতি! 

Sandeshkhali:  আমার ছেলেটা পরীক্ষা দিয়ে ফিরছিল, স্যর তুলে নিয়ে গেল পুলিশের ভ্যানের চাকার সামনে আকুলিবিকুলি মা, DG ফিরতেই সন্দেশখালিতে অন্য বীভৎসতা
সন্দেশখালি অন্য বিভৎসতা
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

সন্দেশখালি:  অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সন্দেশখালির বেড়মজুরে।  গ্রামে পুলিশি ধরপাকড়ের রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গ্রাম। পুলিশি ভ্যানের সামনে গাছের গুড়ি ফেলে বিক্ষোভ, গাছের ডাল হাতে নিয়ে পুলিশের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ালেন গ্রামের মহিলারা! এমনটা একটা দৃশ্য তৈরি হয়, গ্রামের বাঁশের ভাঙা সাঁকোর এক প্রান্ত পুলিশ, আরেক প্রান্ত মহিলা। পুলিশ যাতে কোনওভাবেই গ্রামে ঢুকতে না পারে, সাঁকোর ওপরেই শুয়ে বিক্ষোভ মহিলাদের। সন্দেশখালির বেড়মজুর এদিন দেখাল জনরোষের আরেক দিক। পুলিশি ভ্যানের সামনেই শুয়ে পড়তে দেখা গেল এক বয়স্ক মহিলাকে। রীতিমতো টেনে হিঁচড়ে চ্যাঙদোলাকে করে সরাতে হয় তাঁকে। কারণ তাঁর স্বামী তখন পুলিশের ভ্যানে। অভিযোগ, শাহজাহান, তাঁর চ্যালাদের না গ্রেফতার করে, পুলিশ গ্রামবাসীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

শুক্রবার সকালে বেড়মজুর এলাকা তপ্ত হয়ে ওঠে। তেভাগা আন্দোলনের পীঠস্থানে দখল হয়ে যাওয়া জমি ফেরতের দাবিতে লাঠি, বাঁশ, ঝাঁটা হাতে মেঠো রাস্তায় নামেন গ্রামের মহিলারা। শিবু হাজরা, অজিত মাইতি, তোয়েব মোল্লাদের বিরুদ্ধে জনরোষ আছড়ে পড়ে। বেশ কয়েকটি মাছের ভেড়ি জ্বলতে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান ADG সাউথ বেঙ্গল সুপ্রতীম সরকার। গ্রামের মানুষদের বুঝিতে ফেরত পাঠান। জারি হয় ১৪৪ ধারা।

যখন গ্রামে একদিকে এই পরিস্থিতি তখন অন্যদিকে, শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বাড়িতে ভাঙচুর চলে, স্ত্রী-মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। এসবের মধ্যেই সন্দেশখালি পৌঁছন ডিজি রাজীব কুমার। তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে যান, যাঁরা ভাঙচুর চালিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি তাঁর অফিসারদেরও এই নির্দেশ দিয়ে যান।

এরপর তিনি ফেরত যেতেই অ্যাকশন মোডে পুলিশ। শুরু হয় গ্রামে ব্যাপক ধরপাকড়। আর তাতেই ফুঁসে ওঠেন গ্রামের মহিলারা। গ্রামের রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করতে থাকেন। গ্রামে পুলিশ ঢোকার মুখেই গাছের গুঁড়ি-ডাল হাতে পুলিশের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ান গ্রামের মহিলারা। পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। বিক্ষোভকারী এক মহিলাকে বলেন, “আমাদের ঘরের ছেলেকে টেনে নিয়ে চলে যাচ্ছে। বাধা দিলে আমাদের গায়ে হাত তুলছে। ওরা সব শাহজাহান শেখের লোক।” আরেক মহিলা বলেন, “গ্রামের সব পুরুষদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ি থেকে। রাস্তায় নামব না আমরা। ” এসডিপিও-কে ধাক্কা মারেন গ্রামের মহিলারা।

পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয়, মাইকিং করতে শুরু করেন পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তারা। গ্রামের এক বয়স্ক মহিলা বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। বলেন, “আমার নাতিটা পরীক্ষা দিয়ে আসছিল। হঠাৎ করেই তাকে তুলে নিয়ে গেল। কী বলবেন আপনি! ওরা পুলিশ?”

একটা সময়ে গোটা গ্রাম এসে দাঁড়ায় পুলিশের সামনে। সাঁকোর এক প্রান্তে পুলিশ, অপর প্রান্তে পথ আটকে দাঁড়িয়ে থাকেন গ্রামের মহিলারা। তাঁদের বাড়ির ছেলেদের না ছাড়া হলে যাবেন না, স্পষ্ট জানিয়ে দেন তাঁরা।

পুলিশের তরফ থেকে মাইকিং করা হয়, আইন নিজের হাতে নেবেন না। যাঁরা আইন ভাঙবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু পুলিশি হুঁশিয়ারিতে পরিস্থিতি ফেরে না। ডিজি-র আশ্বাসের পরও সন্দেশখালির বেড়মজুরের মহিলারা আবারও প্রমাণ করলেন, দমবেন না তাঁরা। পুলিশের সামনে আছড়ে পড়ে কাঁদছেন গ্রামের মহিলারা। অভিযোগ, গ্রামের সেই মহিলার সন্তানকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তিনি হলেন, “আমার ছেলে পড়াশোনা করে। ভ্যান চালিয়ে পড়াশোনা করে, ওকে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ।” পুলিশের সামনে আকুলিবিকুলি কান্না গ্রামের মহিলার।


এককথায়, সন্দেশখালি যেন ফেরাল নন্দীগ্রামের স্মৃতি!

Next Article