বনগাঁ: বনগাঁয় ফের বিজয়ী বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। সারা রাজ্যে যখন সবুজ ঝড়, তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা, তখন মতুয়া গড়ে মুষড়ে রয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। পরপর দু’বার জয় পেলেন শান্তনু। শাসকদলের কাছে কি তাহলে ফ্যাক্টর হয়ে গেল গোষ্ঠীকোন্দলের কাঁটা? চর্চায় তৃণমূল নেতৃত্বই।
শান্তনুর প্রাপ্ত ভোট
তাঁর প্রাপ্য ভোট ৭ লক্ষ ১৯ হাজার ৫০৫। ৭৩ হাজারেরও বেশি ভোটে প্রতিপক্ষ তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসকে হারিয়েছেন তিনি। বিশ্বজিৎ দাস পেয়েছেন ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার ৮১২ ভোট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে গণনার প্রথম কয়েক দফায় ভালই ফাইট দিয়েছেন বিশ্বজিৎ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ধরে রাখতে পারেননি।
শান্তনু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
বঙ্গ রাজনীতিতে একটা বড় ফ্যাক্টর মতুয়া ভোট। আর মতুয়া গড়ে মুখ শান্তনু ঠাকুর, যিনি কিনা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীও বটে। তৃণমূলের অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর। নির্বাচনের আবহেই মতুয়া রাজনীতিতে একটা বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছিল ঠাকুর বাড়ির ‘কোন্দল’। ‘বড়মা’র ঘরে কে থাকবেন, নাতি নাতি বউমা, তা নিয়েই নজিরবিহীন দ্বন্দ্বের সাক্ষী থেকেছে গোটা বাংলা। শান্তনু ঠাকুরকে বারুনি মেলার দিন সহস্র ভিড়ের মাঝে শাবল দিয়ে বড়মার ঘরের তালা ভেঙে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তার পরদিন থেকেই মমতাবালা পরে বসে পড়েন ধরনায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেছিলেন, এর প্রভাব হয়তো পড়তে পারে মতুয়া ভোটে।
মতুয়া গড়ে CAA কাজে লাগান শান্তনু
লোকসভা নির্বাচনের আবহেই CAA কার্যকর করে কেন্দ্রীয় সরকার। মতুয়া গড়ে উচ্ছ্বাসের ঝড়। বিজ্ঞপ্তি জারি ও আবেদনের ভিত্তিতে নাগরিকত্বও পেয়েছেন অনেকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সেটা শান্তনুর জয়ে বড় প্রভাব ফেলেছে। তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন, বামেদের একাংশের ভোট বিজেপির দিকে গিয়েছে। এটাও তৃণমূলের হারের কারণ। গত পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যাপক রিগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। রাজনীতির কারবারিদের মতে, সেই সবই শান্তনুকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে।