বসিরহাট : পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চলল বসিরহাটে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের কাছেই। অভিযোগ, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক পুলিশকর্মী। তাঁর ঘাড়ে গুলি লেগেছে। সোমবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বসিরহাট থানার শাঁকচুড়ার বাজারের কাছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে গন্ডগোল হচ্ছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনাস্থলে রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, সোমবার সন্ধ্যায় গোষ্ঠী কোন্দলকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে ওই এলাকা। সংঘর্ষ থামাতে ঘটনাস্থলে যায় বসিরহাট থানার অনন্তপুর ফাঁড়ির পুলিশ। আচমকাই গুলির আওয়াজ শোনা যায়। দুষ্কৃতীর গুলিতে আহত হয়েছেন ওই পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল প্রভাl সর্দার, বয়স ৪২ বছর। এই ঘটনার পরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি শূন্যে চালায় বলে জানা যাচ্ছে।
শাকচুড়া বাজারের টাকি রোডের ওপরে রয়েছে তৃণমূলের ওই কার্যালয়। সেখানেই এদিন সন্ধ্যায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা শুরু হয় বলে অভিযোগ। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। শুরু হয় তৃণমূলের দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক হাতাহাতি। এমনকী একে ওপরকে গালিগালাজ দেয় বলেও অভিযোগ। আর তাতে পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এরপরেই গুলি চলে বলে অভিযোগ।
আহত পুলিশকর্মীকে প্রথমে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনাস্থলে রয়েছেন বসিরহাটের পুলিশ সুপার জেবি থমাস কে., রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ও পৌঁছে গিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা কুতুবুদ্দিন গাজীর দাবি, তৃণমূলের এক নেতা এদিন বাজার থেকে ফিরছিলেন। সেই সময়ে তাঁকে কেউ বন্দুক দেখায়। আর এরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। সেই সময় গুলি চললে গুলিবিদ্ধ হন এক পুলিশ কর্মী। ওই তৃণমূল নেতা আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর পুলিশ তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ঢোকে। শুধু তাই নয়, সেখান থেকে একাধিক অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে বলেও বিস্ফোরক দাবি ওই তৃণমূল নেতার। তাঁর দাবি, এই ঘটনার সঠিক বিচার হোক।
অন্যদিকে পুলিশ নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার বিজেপির যুব মোর্চা সভাপতি এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর দাবি, পুলিশ নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মানুষকে কীভাবে নিরাপত্তা দেবে, সেই প্রশ্ন ওই বিজেপি নেতার। তাঁর দাবি, তৃণমূলের আমলে এই রাজ্য দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। পুলিশকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করার দাবি জানিয়েছেন ওই বিজেপি নেতার।