Sukanta Majumder on Sunil Singh: ‘পরিবারকে ধোঁকা দিয়েছে’, আক্ষেপ অর্জুনের, সুনীলের দলবদলে তবুও ‘আত্মবিশ্বাসী’ সুকান্ত
North 24 Pargana: তৃণমূলের একাংশ মনে করছেন, ভাটপাড়া-ব্যারাকপুরে চত্বরে অর্জুনের প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে। অর্জুনের গড় বলে পরিচিত ভাটপাড়া-ব্যারাকপুর চত্বর একরকম বিজেপির ‘পাকাপোক্ত’ ঘর বলেই পরিচিত। সেখানে ফাটল ধরাতে দীর্ঘদিন তৎপর ছিল তৃণমূল।
উত্তর ২৪ পরগনা: ‘আমাকে ধোঁকা দিয়েছে, পরিবারকে ধোঁকা দিয়েছে’, আপন ভাইপো, ভগ্নিপতির বিজেপি ত্যাগের ঘটনায় প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ব্যারাকপুর সাংসদ অর্জুন সিংয়ের। যদিও, সাংসদ-ভাইপোর দলত্যাগকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। নিজ গড়েই বড় ধাক্কা খেয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। বিজেপির তরফে প্রার্থীপদ পেয়েও দলত্যাগ করেছেন অর্জুনের ভাইপো সৌরভ সিং, ভগ্নিপতি সুনীল সিং ও তাঁর ছেলে আদিত্য সিং। তিনজনেই বিজেপির তরফে এ বার পুরভোটে প্রার্থীপদ পেয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপিতে থেকে কাজ করতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ তাঁদের। তাই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁরা। খাস অর্জুনের গড়ে এভাবে তাঁরই আত্মীয়দের শাসক শিবিরে যোগদান কার্যত তৃণমূলকে আরও শক্তিশালী করবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। যদিও সুনীলের দলত্যাগে বিশেষ কোনও ক্ষতি হবে না বলেই দাবি সুকান্তর।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি বিষয়টা শুনেছি। তবে এ নিয়ে বিশেষ ভাবতে রাজি নই। সুনীল চলে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হবে না। তাঁর চেয়েও বড় নেতা ছিলেন কল্যাণ সিং। তিনিও দল ছেড়ে গিয়ে ফের দলেই ফিরেছিলেন।অর্জুন সিং রয়েছেন, আমাদের সাংসদ। তিনি অনেক শক্তিশালী নেতা। সুনীল, সৌরভের যাওয়ায় দলে কোনও প্রভাব পড়বে না। আমরা ভাল ফল করব এখানে।”
অন্য়দিকে, আপন ভাইপো, ভগ্নিপতির এমন সিদ্ধান্তে কার্যত মর্মাহত সাংসদ অর্জুন সিং। তাঁর কথায়, “আমি অত্যন্ত আঘাত পেয়েছি। এমনটা হবে আশাও করিনি। আমাকে ধোঁকা দিয়েছে ওরা। পরিবারকে ধোঁকা দিয়েছে। আমাদের পরিবারে, একজন তৃণমূল, একজন বিজেপি, একজন সিপিএম করবে এমনটা ভাল দেখায় না। যাক গে, এতে বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে। বিজেপির যে ভোটার রয়েছে তা থাকবে।”
সূত্রের খবর, গারুলিয়া পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড, ১৭ নম্বর ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে যথাক্রমে বিজেপির তরফে প্রার্থী পদ পেয়েছেন আদিত্য, সৌরভ ও সুনীল। কিন্তু, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেই তিনজনেই প্রার্থীপদ ফিরিয়ে দিলেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তিনজনেই জানিয়েছেন, বিজেপিতে থাকাকালীন তাঁরা কার্যত দলে ব্রাত্য ছিলেন। কাজ করতে পারছিলেন না কেউ। তাই ‘উন্নয়নের স্বার্থে’ তৃণমূলে যোগ দেন সকলে। শনিবার যখন চার পুরনিগমে পুরভোট, তখন ভাটপাড়ায় মহকুমা শাসকের দফতরে যান সুনীল-সৌরভরা। তারপর তৃণমূলের দফতরে গিয়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিকের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন।
সূত্রের খবর, সাম্প্রতিককালে তৃণমূলের সঙ্গে সুনীল সিং যোগাযোগ করা শুরু করেছিলেন। শাসক শিবিরের নানা অনুষ্ঠানেও তাঁকে বিভিন্ন সময়ে দেখা গিয়েছে। এমনকী, সুনীলের শাসকনেতাদের প্রতি ‘নরম মনোভাব’ও নজর এড়ায়নি। ফলে, তাঁর গতিবিধি নিয়ে দলের অন্দরেই জল্পনা শুরু হয়েছিল। অবশেষে শনিবার ত়ৃণমূলে যোগ দেন সুনীল।
সুনীল সিং তাঁর নিজের দলবদল নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “আমরা যাঁরা রাজনীতির ছেলে, পাকাপাকিভাবে রাজনীতি করি, আমাদের পক্ষে বিজেপি করা সম্ভব নয়। বিজেপিতে থেকে উন্নয়নের কাজ করা যায় না। বাকি কোথায় কী হচ্ছে জানি না, তবে বিজেপিতে থেকে হবে না। তাই তৃণমূলে যোগদান করেছি। আমরা ভেবেচিন্তেই যোগ দিয়েছি।”
আর এতে, তৃণমূলের একাংশ মনে করছেন, ভাটপাড়া-ব্যারাকপুরে চত্বরে অর্জুনের প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে। অর্জুনের গড় বলে পরিচিত ভাটপাড়া-ব্যারাকপুর চত্বর একরকম বিজেপির ‘পাকাপোক্ত’ ঘর বলেই পরিচিত। সেখানে ফাটল ধরাতে দীর্ঘদিন তৎপর ছিল তৃণমূল। কিন্তু তা হয়নি। এ বার, অর্জুনের নিকটাত্মীয়দের যোগদানে যে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদকে কিছুটা কোণঠাসা করা যাবে , এমনটাই মনে করছে শাসক শিবির।
তৃণমূল নেতা তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথায়, “অর্জুন তো বলেছিলেন ট্রেলর দেখাবেন। আমরা ওঁকে সিনেমা দেখালাম। নিজের ভাইপো, ভগ্নিপতি ওঁকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। নিজের পরিবারকেই ধরে রাখতে পারলেন না। আমাদের ধারণা অর্জুনও আর বিজেপিতে বেশিদিন থাকবেন না। তিনিও তৃণমূলে ফিরে আসবেন। ”
আরও পড়ুন: WB Municipal Election 2022 LIVE Updates: ভোট শুরু হতেই ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ বিধাননগরে
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা