PM Awas Yojana: এবার আশা কর্মীদের নাম আবাস যোজনার তালিকায়, একজন বললেন, ‘ঘরটা পেলে ভালই হত’

TV9 Bangla Digital | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Dec 26, 2022 | 2:27 PM

Awas Yojana: বসিরহাট মহকুমার এক নম্বর ব্লকের গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অনন্তপুর। সেখানে বসবাস করেন বছর ৪৫ এর রেহেনা মণ্ডল।

PM Awas Yojana: এবার আশা কর্মীদের নাম আবাস যোজনার তালিকায়, একজন বললেন, ঘরটা পেলে ভালই হত
আশাকর্মীদের নাম তালিকায় (নিজস্ব চিত্র)

Follow Us

বসিরহাট: ‘আবাস যোজনা’ প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড়। বিরোধীরা বারবার দাবি করছেন আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে বিশেষ করে পঞ্চায়েত এলাকায়। রাজ্য ও জেলা প্রশাসন আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন সার্ভে করার জন‍্য। তাঁরা আবাস যোজনার ঘর নিয়ে সার্ভে করতে গিয়ে হেনস্থা ও মারধরের শিকার হচ্ছেন। এমনকী সার্ভের জেরে অপমানের শিকার হয়ে একজন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর মৃত্যুও ঘটেছে। কিন্তু এবার উল্টো চিত্র ধরা পড়ল। অভিযোগ, আবাস যোজনার ঘরের তালিকায় নাম রয়েছে আশা কর্মীদের।

বসিরহাট মহকুমার এক নম্বর ব্লকের গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অনন্তপুর। সেখানে বসবাস করেন বছর ৪৫ এর রেহেনা মণ্ডল। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আশা কর্মীর কাজের সঙ্গে যুক্ত। প্রকল্পের সার্ভে তালিকায় নাম এসেছে তাঁর। যদিও তাঁর দাবি, তিনি সরকারি চাকরি করেন, পাশাপাশি ছেলেও সরকারি চাকরির সঙ্গে যুক্ত, তাই তিনি ঘর পাওয়ার যোগ্য নন। তাঁর দাবি, যাঁরা ঘর পাওয়ার যোগ্য তারা ঘর পাক।

তবে শুধু রেহানা মণ্ডল নয়। আরও এক আশা কর্মীর নাম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। তিনি বছর ৪০ এর মঞ্জুরা বিবি। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে আশা কর্মীর কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরও নাম এবার আবাস যোজনার তালিকায় এসেছে। যদিও তিনি দাবি করেছেন, আবাস যোজনার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি এও বলছেন, ‘ঘরটা পেলে ভালই হত।’

এ দিকে, ঘর পাওয়ার লিস্টে খোদ আশা কর্মীদের নাম আশায় ফের বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ওই সকল আশা কর্মীদের দাবি, ইতিমধ্যে বসিরহাট এক নম্বর ব্লকের বিডিওর কাছে তাঁরা আবাস যোজনার তালিকার থেকে নাম কেটে দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

এখানেই শেষ নয়, আবাস যোজনার ওই তালিকায় একই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূলের নেত্রী প্রধানের দেওর ও শাশুড়ির নাম এসেছে। এই নিয়ে গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতে রাজনৈতিক ভাবে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে বিরোধীরা আঙুল তুলতে শুরু করেছে খোদ তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে। প্রধান রাবিয়া জানান, “আমার কাছে ঘরের নামের তালিকা আসা মাত্রই দেখি আমার দেওর ও শাশুড়ির নাম রয়েছে। আমি সোজা বিডিওর কাছে গিয়ে লিখিত আবেদন জানিয়েছি যাতে তাঁদের নাম কেটে দেওয়া হয়। মাত্র দু’বছর হয়েছে প্রধানের পদ পেয়েছি। এর আগে প্রধান হালিমা বিবি ছিলেন। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তারপর থেকে দায়িত্ব পাই। আমি এর আগে পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলাম। দীর্ঘ দশ বছর ধরে বাড়িতে সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চালাই। আমার একতলা বাড়ি আছে। যারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, অবিলম্বে তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি।” এই বিষয়ে গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, যাঁরা প্রকৃত দুঃস্থ গরিব মানুষ, যাদের ঘর পাওয়ার প্রয়োজন তারা পাচ্ছে না।

বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক সুকল্যাণ বৈদ্য বলেন, “এখন শুনছি আশাকর্মীদের নামে ঘরের তালিকা রয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। আসলে আশা কর্মীদের ভয় দেখানো হয়েছে, বলা হয়েছে তোমরা যদি আমাদের কথা মতো না চলো তাহলে বিপদে পড়বে, আর আমাদের পছন্দ মতো লিস্ট রাখলে এই ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবে।” অপরদিকে, গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য বলেন মৃত্যুঞ্জয় কর্মকার বলেন, “এখান থেকে তিন বছর আগে সার্ভের যে লিস্ট হয়েছিল সেই সময় যাদের অবস্থা খারাপ ছিল তখন তাদের নাম ছিল। এবার যিনি আশা কর্মী, তাঁর অর্থনৈতিক অবস্থা যদি খারাপ হয় তাঁর নামও তোলা হয়েছিল আবাস যোজনার তালিকায়। এখন তাঁদের অবস্থার পরিবর্তন হতেই পারে। আমি নিশ্চিত তাঁরা এখন গিয়ে বিডিও-র কাছে নিজের নামের তালিকা বাদ দিচ্ছে।”

Next Article