উত্তর ২৪ পরগনা: চারিদিকে যখন পুজো-পুজো গন্ধ তখন শোকের ছায়া ব্যারাকপুর ও বেলঘড়িয়ার দুই পরিবারে । তাদের বাড়িতে এল কফিনবন্দী দেহ।
চলতি মাসের ১১ সেপ্টেম্বর ট্রেকিংয়ের জন্য পাহাড়ে গিয়েছিলেন বছর আটচল্লিশের বাসিন্দা সন্দীপ কুমার ঠাকুরতা ও ভাস্কর মুখার্জি । হিমাচল প্রদেশে গিয়েছিলেন তাঁরা । প্রথম জনের বাড়ি বেলঘড়িয়ার যতিন দাস নগর অন্যজন থাকতেন ব্যারাকপুর। ১০ জনের একটি দল নিয়ে তারা ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন।
এর কয়েকদিন পর সন্দীপবাবুর বাড়িতে খবর আসে ট্রেকিং করতে গিয়ে হিমাচল প্রদেশের মাহিঙ্গার হিমবাহতে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। কিন্তু তখনও ভাস্কর মুখার্জীর বিষয়ে কোনও খবর মেলেনি। পরে খবর আসে তিনিও আর নেই।
সেই সময় দুই পরিবারের তরফ থেকেই রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয় যাতে কোনও ভাবে তাদের মৃতদেহ যেন পরিবারকে দেওয়া হয়। সেই মতো রাজ্য সরকার জানায় হিমাচল সরকারকে। অনেক চেষ্টার পর গতকাল দিল্লি এসে পৌঁছায় মরদেহ। আজ সকালে দমদম এয়ারপোর্টে দুই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় মরদেহ।
দুর্ঘটনার খবর পরিবারের কাছে পৌঁছাতেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সেই সময় স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “প্রত্যেক বছরের মতো এই বছরও সন্দীপবাবু ট্রেকিং গিয়েছিলেন। চলতি মাসের ১১ তারিখ হিমাচলে গিয়েছিলেন তিনি। এর আগে ওনার মা মারা যান। সেই খবরও জানানো যায়নি। পরের মাসের ৩ তারিখ বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তার আগেই দুঃসংবাদ এসে পৌঁছাল। আরও একজন ছিলেন ভাস্কর দেব মুখোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুর খবরও এসেছে। বাকি কারও খবর পাওয়া যায়নি। এই অবস্থায় এখন কীভাবে ওনার মৃতদেহ পাওয়া যাবে সেই চিন্তাই করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, এর আগে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে খবরে আসে হিমাচল প্রদেশ। গত ২১ জুলাই ভূমিধস নেমেছিল, তাতে লাহুল-স্পিতিতে আটকে পড়েছিলেন ২০০-র বেশি মানুষ। এরপর নতুন করে তিন যুবক, যাঁরা ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন, তাঁরাও নিখোঁজ হয়ে যান।
লাগাতার বৃষ্টিতে নতুন করে ধস নামে শিরমৌরে। ধসের জেরে বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়কও। ৭০৭ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি বড় অংশ খাদে তলিয়ে যায়। ধসের জেরে সিলাই ও পাওতা সাহেব এলাকার মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সেই সময় রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডিরেক্টর সুদেশ কুমার মোখতা জানিয়েছিলেন, হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন অংশে প্রায় ২২১ জন মানুষ আটকে পড়েছেন ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে। এদের মধ্যে ১৯১ জন হিমাচল প্রদেশেরই বাসিন্দা, বাকি ৩০ জন পর্যটক। এদের মধ্যে ১৩ জন পঞ্জাবের বাসিন্দা, ৪ জন দিল্লির এবং ৩ জন করে মহারাষ্ট্র ও ওড়িশার বাসিন্দা ছিলেন।
আরও পড়ুন: Frequent cramping: প্রতিরাতে পায়ের পেশিতে টান ধরে? এড়িয়ে গেলেই শরীরে বাসা বাধতে পারে মারাত্মক রোগ!