উত্তর ২৪ পরগনা: ফের ভালবাসার টানে ঘর ছাড়লেন দুই গৃহবধূ। এবার ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানা এলাকা। পরিবারের দাবি, দুই টোটো চালকের সঙ্গে পালিয়ে যান একই পরিবারের দুই বউ। সঙ্গে একজন তাঁর ৯ বছরের সন্তানকেও নিয়ে যান। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে বাগদা থানার সিন্দ্রানি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। দুই তরুণীর নাম মিঠু পাল ও পবিত্রা পাল। বউমাদের ফিরে পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বৃদ্ধ শ্বশুর। তাঁর দাবি, বউমারা এলে ঘরে ফিরিয়ে নিতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু প্রেমের জোয়ারে দুই বউ যে কোথায় ভেসে গিয়েছেন, সেটাই তো বুঝে উঠতে পারছে না পরিবার।
যে দুই যুবকের সঙ্গে সিন্দ্রানি এলাকার দুই বউমা বাড়ি ছেড়েছেন বলে অভিযোগ, তাঁদের নাম বিশ্বজিৎ মণ্ডল ও শিবু মজুমদার। বিশ্বজিৎ টোটো চালান। অন্যদিকে শিবু মজুমদারের সিন্দ্রানি বাজারে একটি চালের দোকান রয়েছে। একইসঙ্গে টোটোও চালান তিনি। অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গেই বাড়ি ছেড়েছেন পাল বাড়ির মেজো বউ মিঠু ও ছোট বউ পবিত্রা। পরিবারের দাবি, দু’জনের স্বামীই কর্মসূত্রে বাড়ির বাইরে থাকেন। অন্যদিকে পাল বাড়ির বড় ছেলে পরিবার নিয়ে অন্য জায়গায় থাকেন। মেজো ও ছোট ছেলের বউ, তাঁদের সন্তানদের নিয়ে সিন্দ্রানিতে শ্বশুর ভিটায় থাকেন।
অভিযোগ, গত শনিবার ননদের বাড়ি যাওয়ার নাম করে দুই বউমা বাড়ি থেকে বের হন। ছোট বউ তাঁর ছেলেকেও সঙ্গে নিয়েছিলেন। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। এদিকে এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ বিশ্বজিৎ ও শিবুর পরিবার। তাঁরাও একই এলাকার বাসিন্দা। মিঠু, পবিত্রার শ্বশুর শিবব্রত পাল বলেন, “বেলডাঙায় আমার ছোট বউমার বাপের বাড়ি। মেজো বউমা কৃষ্ণনগরের খামারপাড়ার মেয়ে। বছর দশেক হতে চলল ছেলেদের বিয়ের। এখন বউমারা পালিয়ে গেল, প্রেমের টানেই গেছে। না হলে প্রলোভন দেখিয়েছে হয়ত, চলো দিঘা বেরিয়ে আসি। ছেলেরা পুণেতে কাজ করে। সেই সুযোগেই এই ঘটনা ঘটাল।” দুই বধূর শ্বশুর জানান, যাওয়ার আগে মেজো বউ প্রায় দেড় ভরির সোনা নিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে ছোট বউ ভরি চারেক নিয়েছেন যাওয়ার আগে।
সিন্দ্রানি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান সৌমেন ঘোষ বলেন, “একই পরিবারের দুই বউ। তাঁদের দুই টোটো চালক প্রেমের কথা বলে নিয়ে গিয়েছে। সঙ্গে একটা বাচ্চাও নিয়ে গিয়েছে বলে শুনেছি। বউয়ের শ্বশুরমশাই গ্রামের লোকজন নিয়ে আসেন। আমি বলেছি আইনের দ্বারস্থ হন। থানায় যান। আমি থানায় বলে দিচ্ছি, যাতে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনতে পারে। বউরা যদি ফেরে তবে সংসারে মেনে নেবেও বলেছে পরিবার।” অন্যদিকে শিবুর স্ত্রী রিনা মজুমদার বলেন, “যদি সে ফিরে আসতে চায় ফিরে আসুক। আমি গ্রহণ করব। তার জন্য ধিক্কার বা ঘৃণা কোনওটাই আমি মনে রাখব না।” এর আগে হাওড়ার বালির দুই গৃহবধূ এভাবেই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে ঘর ছাড়েন। পরে তাঁদের ঠাঁই হয় জেলে। এক্ষেত্রেও কি দুই টোটো চালকের জন্য গারদই অপেক্ষা করছে? প্রেমের টান যাই হোক, দেশের আইন কিন্তু বিশেষ স্বস্তিতে রাখছে না তাঁদের।