বসিরহাট: একের পর প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছে সুন্দরবন। কখনও আয়ালা, কখনও বুলবুল ককনও বা ইয়াস। কম ঝড় দেখেনি সুন্দরবন। প্রকৃতির রুদ্র রোষের মুখে পড়ে বারেবারে ভেঙে পড়ে সুন্দরবন। ঠিক সেইভাবেই আবাও নিজেদের জীবনের গতিকে ফিরিয়ে আনতে সমস্ত প্রয়াস জারি রাকে তারা। আবারও নিম্নচাপের ভ্রুকুটি সুন্দরবনে। বৃষ্টি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সেখানে। ফের ক্ষতির আশঙ্কায় সেখানকার মৎস্যজীবীরা। তবে স্বস্তি এবার মিলেছে কিছুটা স্বস্তি! তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্যসরকার। বিনামূল্যে মৎস্যচাষীদের মাছের মীন দান করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীদের পাশে রাজ্য মৎস্য দপ্তর। বসিরহাট মহকুমার সন্দেশখালি ১ ও ২ নং, হিঙ্গলগঞ্জ, হাড়োয়া, মিনাখাঁ ও স্বরূপনগর সহ দশটি ব্লকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক মাছের ভেড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত প্রচুর মৎস্যজীবীদের মিষ্টি জলের মাছের মীন দেওয়া হলো। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীরা ২০ কেজি করে সাদা মাছের পোনা পেয়ে খুশি।
চলতি বছরের দীর্ঘ করোনা আবহে জেরে মাছ চাষ করলেও রপ্তানি করতে পারেননি। তার ওপরে লাগাতার নিম্নচাপের জেরে মাছ চাষের কয়েক লক্ষ হেক্টর ভেঁড়ি জলে ভেসে গিয়েছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন মৎস্যজীবীরা। এদিন ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীদের মিষ্টি জলের রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কাপ ও তেলাপিয়া সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা দেওয়া হয়।
আজ মাছের পোনা তাঁদের হাতে তুলে দেন স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণী দপ্তরের কর্মধ্যক্ষ অনুসূয়া মণ্ডল ও কর্মাধ্যক্ষ রমেন সর্দার সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবী তরুণ মণ্ডল ও শ্যামল বিশ্বাস বলেন, “যেভাবে মৎস্য দপ্তর থেকে মাছের পোনা দেওয়া হচ্ছে তাতে আমদের খুব উপকার হবে। আগামী দিন মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারব।” পাশাপাশি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
প্রসঙ্গত, এর আগেও সরকারি সাহায্য় পেয়েছেন সুন্দরবনের মানুষজন।বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া ব্লকের শালিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও পর্যন্ত জলমগ্ন রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে তালবেড়িয়া গ্রাম। প্রায় ৩০০ বেশি পরিবার বসবাস করে সেখানে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, নিম্নচাপের বৃষ্টিতে একশোর বেশি কাঁচাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারই মধ্যে নতুন করে ঘূর্ণাবর্তে আবার দুর্যোগের আশঙ্কা উপকূলের জেলাগুলিতে।
বিশেষ করে বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া, সন্দেশখালি ও মিনাখাঁ একাধিক ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে অতিরিক্ত বৃষ্টির জল জমে ক্ষতির মুখে সাধারণ মানুষ। দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে আগাম তাঁদের বাড়ি-বাড়ি চাল, ডাল, আলু, সর্ষের তেল পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার সহ আরও কিছু শুকনো খাবার যেমন চিড়ে, গুড় ও বাতাসা সহ ত্রিপল নিয়ে সকাল-সকাল হাজির হলেন হাড়োয়া ব্লকের জনপ্রতিনিধিরা।