উত্তর ২৪ পরগনা: স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হল। বসিরহাটের সন্দেশখালি থানার বড় তুষখালি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই গ্রামেরই বাসিন্দা ভবতোষ সর্দার। পেশায় পার্শ্বশিক্ষক তিনি। অভিযোগ, ভবতোষের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ভবানী সর্দারের (৩৫) দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এমনও অভিযোগ, মাঝে মধ্যে চরমে পৌঁছত দাম্পত্য কলহ। স্ত্রীর গায়ে স্বামী হাতও তুলতেন। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার ওই তরুণী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই শুক্রবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয় । এরপরই শুক্রবার জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান মেয়ের বাপের বাড়ির লোকজন। তার ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় ভবতোষকে। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে।
ভবানীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত বছর আগে তাদের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় ভবতোষের। ভবতোষ-ভবানীর দুই মেয়ে, এক ছেলে। পরিবারের অভিযোগ, প্রায়ই স্বামী, স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হত। কখনও কখনও তা চরম আকার নিত। পেশায় পার্শ্বশিক্ষক ভবতোষ স্ত্রীর গায়ে হাতও তুলতেন বলে অভিযোগ নিহতের ভাইয়ের। তাঁদের কথায়, নিয়মিত এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই ভবানী নিজেকে শেষ করে দেন।
ভবানীর পরিবার জানান, এই দাম্পত্য কলহ এমন জায়গায় পৌঁছয় সালিশি সভা পর্যন্ত তা গড়ায়। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। উল্টে ঝামেলা চলতই। নিয়মিত স্ত্রীকে ওই শিক্ষক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই ভবানীর এই কঠিন পদক্ষেপ বলে দাবি পরিবারের। বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। সন্দেশখালি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রায় আট ঘণ্টা জীবন মরণ লড়াই চালান ওই তরুণী। শুক্রবার ভোরের দিকে মৃত্যু হয় তাঁর। এরপরই ভবতোষের নামে লিখিত অভিযোগ জানান তাঁর শ্যালক। এদিন গ্রেফতারও করা হয় তাঁকে। শনিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে অভিযুক্তকে। যদিও এ নিয়ে অভিযুক্তের পরিবারের তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে সন্দেশখালি থানার পুলিশ।