মালদহ : গতকাল থেকেই রাজ্যে ছড়ায় ওমিক্রন আতঙ্ক। খোঁজ মেলে বাংলার প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের। জানা যায়, মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বাসিন্দা এক ৭ বছরের বালক আক্রান্ত হয়েছে করোনা নয়া ভ্যারিয়েন্টে। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। আজ তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। অর্থাৎ সে সংক্রমণ মুক্ত হয়েছে। গত কয়েকদিনে কারা তার সংস্পর্শে এসেছে, তা খুঁজে বের করার কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে বালকের করোনা মুক্ত হওয়ার খবর অবশ্যই স্বস্তিদায়ক।
গতকাল মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ও বালকের নমুনায় নয়া ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির খবর জানা যায়। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়ায় গোটা রাজ্য জুড়ে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে তড়িঘড়ি সংক্রামিত বালক ও তার পরিবারের সদস্যদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাদের আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে সংক্রামিত ওই বালক ও তার পরিবারের প্রত্যেকের দ্বিতীয়বার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
বৃহস্পতিবার মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরফ থেকে জানানো হয় যে, ওই বালকের আরটি- পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ। পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় তাদেরকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় আজ। তবে পরিবারের লোকেদের দাবি এর আগেও তাঁরা মালদার একটি বেসরকারি ল্যাব থেকে করোনা টেস্ট করিয়েছিলেন। তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সে বিষয়টি জানানোর পরও তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলে দাবি করেছে ওই পরিবার।
আজ দুপুরেই মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বালক সহ তার পরিবারের প্রত্যেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, বালক ও তার পরিবারের প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছেন। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ ডিসেম্বর আবু ধাবি থেকে এসে হায়দরাবাদে বিমানবন্দরে অবতরণ করে ওই বালক ও তার বাবা-মা। হায়দরাবাদে দু দিন থাকার পর ১৪ ডিসেম্বর কলকাতায় ফেরে সেই পরিবার। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে গতকালই তারা মুর্শিদাবাদের বাড়িতে ফেরে। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বাসিন্দা ওই পরিবার।
এ দিকে, আবু ধাবি থেকে এসে হায়দরাবাদে বিমানবন্দরে নামার পর ওই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে বাবা-মায়ের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তবে বালকের নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপরই ওই নমুনা জেনোম সিকোয়েন্সিং-এর জন্য পাছানো হয়। তেলেঙ্গানা সরকার ওই রিপোর্টে জানতে পারে ওই বালক ওমিক্রনে আক্রান্ত। এরপরই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সে কথা জানানো হয় তেলেঙ্গানার তরফ থেকে। এরপরই জানা যায় ওই বালক ওমিক্রনে আক্রান্ত।
কতদিনে সুস্থ হল প্রশ্নটা আদতে আপেক্ষিক। গত ১০ ডিসেম্বর মধ্যরাতে হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে কোভিড পরীক্ষা করানো হলে পজিটিভ হয় বালক। ১২ ডিসেম্বর মালদহে পৌঁছনোর পরে ফের পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ১৫ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য দফতরের পরীক্ষাতেও রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। আপাতদৃষ্টিতে তিনদিনের মাথায় নেগেটিভ ওই আক্রান্ত। কিন্ত উপসর্গহীন বালকের দেহে জীবাণুর ইনকিউবেশন পিরিয়ড কবে থেকে শুরু হয়েছে, তা কেউ জানে না। বিমানবন্দরে প্রোটোকলের আওতায় না পড়লে পরীক্ষাও হত না, ধরাও পড়ত না!
আরও পড়ুন : BJP Protest: ‘নবান্নের ১৪ তলা অবধি কিষাণ মার্চ হবে’, সিঙ্গুর থেকে ঘোষণা বিজেপির রাজ্য সভাপতির