আসানসোল: বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা। আসানসোল জেলা হাসপাতালে ঢুকেই অগ্নিশর্মা বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সুপারকে একহাত নিলেন তিনি। জমা দিলেন স্মারকলিপিও।
শনিবার সন্ধ্যায় বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল দলের সমর্থকদের নিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। তিনি জেলা হাসপাতালের সুপার ডাক্তার নিখিল চন্দ্র দাসকে একহাত নেন ও ডেপুটেশন জমা দেন।
অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, গত মঙ্গলবার রাতে বার্ণপুরের চিত্রা মোড়ে ওভারলোড বালি বোঝাই গাড়িতে চাপা পড়ে এক যুবকের মৃত্যুতে হয়েছে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে। রোগী পরিবারের লোকেদের সঙ্গে ডাক্তার ও নার্সরা খারাপ ব্যবহার করেছেন। এছাড়া জেলা হাসপাতালে বিভিন্ন চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিল্পাঞ্চলের মানুষ। এখানেই শেষ নয়, বিজেপি নেত্রীর অভিযোগ, এই জেলা হাসপাতালে সঠিক পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না। অগ্নিমিত্রার নিজের বিধানসভা এলাকায় রয়েছে জেলা হাসপাতাল। তা সত্ত্বেও বিধায়ক হিসাবে হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতিতে তাঁকে রাখা হয়নি।
বিধায়ক বলেন, ‘বালি বোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় দুই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে যার মধ্যে একজন বিট্টু সিং। যিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। আরেকজন বিদেশে দেওঘরিয়া। যাকে জেলা হাসপাতাল আনা হয়েছিল এবং সাড়ে তিনঘন্টা ধরে হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে সকালে তাকে অন্যত্র রেফার করা হয় এবং তখনই মৃত্যু হয়।’
তৃণমূল কর্মী বিদেশ দেওঘরিয়া নামে ওই যুবকের পরিবারের লোকেরা অগ্নিমিত্রাকে অভিযোগ করেছেন। চিকিৎসায় গাফিলতি রয়েছে ও ডাক্তার নার্সরা দুর্ব্যবহার করেছেন। এলাকার মানুষেরা তাকে জেলা হাসপাতাল নিয়ে সমস্যা ও পরিষেবা না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ করেছেন। এইসব কিছু জানিয়ে সুপারকে এদিন স্মারকলিপি জানা দেন।
তিনি বলেন, ‘সুপারকে বলেছি সব কিছু ঠিক করতে। পরে আবার খবর নেব। তারপরও যদি দেখি কিছু হয়নি, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন করব।’ অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, জেলা হাসপাতালের ৬ বছর ধরে পড়ে থাকা ট্রমা সেন্টার এখনও চালু হয়নি। হাসপাতালে বার্ন ইউনিট আধুনিক নয়। হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পর্যাপ্ত নেই। পর্যাপ্ত এনেস্থিসস নেই। সামান্য ছোটখাটো কিছু হলেই অন্যত্র স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়। পর্যাপ্ত ওষুধ পাচ্ছেন না রোগীরা। এছাড়াও অভিযোগ, আসানসোল দক্ষিণের তিনি বিধায়ক আর আসানসোল দক্ষিণেই রয়েছে জেলা হাসপাতাল। অথচ রোগী কল্যাণ সমিতিতে তাঁকে রাখা হয়নি কিন্তু চেয়ারম্যান করে রাখা হয়েছে মন্ত্রী মলয় ঘটককে ও অন্যান্য তৃণমূল কাউন্সিলর সহ নেতাদের।
হাসপাতাল সুপার অগ্নিমিত্রার অভিযোগ নিয়ে বলেন, ‘উনি অনেক কিছু বলেছেন। সবকিছু খতিয়ে দেখব। তারমধ্যে এমন কিছু আছে, যা আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না।’
শনিবার অগ্নিমিত্রার স্মারক লিপি দেওয়ার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতাল চত্বরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে তিনি যখন বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন বহু রোগী এবং তাদের পরিবার অগ্নিমিত্রা পালের কাছে অভিযোগ করেন বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে।