আসানসোল: গত ৯ ডিসেম্বর সিবিআই আদালতে শুনানি হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের। জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ১৪ দিন জেল হেফাজত শেষে কেষ্টর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয় ২২ ডিসেম্বর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার। সেই মতো এদিনই আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে অনুব্রত মণ্ডলের হাজিরা হওয়ার কথা। কিন্তু বীরভূমের দুবরাজপুরের অন্য একটি মামলায় হঠাৎ করে দুবরাজপুর থানার পুলিশ তাঁকে মঙ্গলবার তুলে নিয়ে যায়। দুবরাজপুর আদালতে পেশ করার পর ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত হয় অনুব্রত মণ্ডলের। তিনি এখন দুবরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পাসে রয়েছেন। পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে সিবিআই আদালতে যে প্রোডাকশন ছিল তার কী হবে? সূত্রের খবর, এদিন আদালতে তাঁকে আনা হবে না। সশরীরে হাজিরা হবে না, এমনকি ভার্চুয়াল প্রোডাকশন হবে না। কারণ তিনি পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। যদি জেল হেফাজতে থাকতেন, তবে তাঁকে হয়তো সশরীরে বা ভার্চুয়াল হাজিরা দিতে হত। তবে এদিন আসানসোল আদালতে সিবিআই আধিকারিকরা আসবেন। তাঁরা হয়তো বিচারককে সব কথা জানাবেন। আগামী দিনে সিবিআই কি করতে চলেছে সেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।
শেষবার যখন অনুব্রত মণ্ডলকে হাজির করা হয় তখন কিন্তু তাঁর আইনজীবীর পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়নি। কারণ ততদিনে ইডি তাঁকে শোন এরেস্ট করেছে। গত ১৭ নভেম্বর শোন্ অ্যারেস্ট হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডল ইডির কাছে। তারপর থেকে সিবিআই আদালতে কিন্তু তাঁর আইনজীবী একবারের জন্য জামিনের আবেদন করেননি। এই সময় হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করে মামলা শুরু হয়েছে। যার শুনানি রয়েছে শুক্রবার। অর্থাৎ ২৩ তারিখ।
তবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এদিন শুনানি হওয়ার কথা ছিল। প্রথমত অনুব্রত মণ্ডলের যে দুটি মোবাইল ফোন ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছিল, তা ফেরত চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল এবং ভোলেবোম রাইস মিলের অ্যাকাউন্ট ডি ফ্রিজের আবেদন সংক্রান্ত শুনানি ছিল। সেই দুটি শুনানির কি হবে তা জানা যাবে সময় গড়ালে।
গত ৯ ডিসেম্বর বিচারক লেটেস্ট বা আপডেট সিবিআই-এর তদন্তের কপি দেখে মন্তব্য করেছিলেন, “আমার ২০ বছরের সার্ভিস লাইফে আমি এমন দেখিনি, শোনা তো দূরের কথা।” গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিচারককে দেওয়া সিবিআইয়ের কেসডায়েরি দেখে এমন মন্তব্য করলেন বিচারক। বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। তৈরি হয়েছে এ নিয়ে নানা জল্পনা। কী এমন তথ্য রয়েছে ওই ফাইলে কিংবা কোন এমন নাম রয়েছে যা দেখে বিচারক অবাক হয়ে গেছেন।
আদালতের মধ্যেই গুঞ্জন ওঠে তাহলে কি ডিসেম্বর ধামাকা লুকিয়ে রয়েছে এই আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের মধ্যেই ? গরু পাচার মামলার তদ অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি। হাসতে হাসতে শুধু বলেছেন, “এখন তো শুধু ট্রেলার, সিনেমা বাকি আছে।”